ছবি: সংগৃহীত।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এর অংশ হিসেবে অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের বিতারণের ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তিনি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্বের নীতি বাতিলের কার্যক্রম শুরু করতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশু আর জন্মসূত্রে দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদ থেকেই এ নীতিকে ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যা দেন এবং পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। যদিও এটি ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে স্বীকৃত একটি অধিকার। এর ফলে, রাতারাতি আইনটি কার্যকর না হলেও বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হলো।
আইনটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হলে ১৬ লাখ ভারতীয়, যারা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে। পিউ রিসার্চের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান বসবাস করেন। এর মধ্যে ১৬ লাখ জন্মসূত্রে নাগরিক।
ট্রাম্প এর আগেও এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই নীতি পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হলো অভিবাসীদের সন্তান রেখে বাবা-মাকে দেশে ফেরত পাঠানোর বদলে পুরো পরিবারকেই ফিরিয়ে দেওয়া।
একই দিনে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বের হওয়ার আদেশে সই করেছেন।
১৮৯০ সালের পর ট্রাম্পই প্রথম ব্যক্তি যিনি একটি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল রোটুন্ডায় আয়োজিত শপথ অনুষ্ঠানে বিদেশি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণের পর প্রথম ভাষণে ট্রাম্প চীন দ্বারা পরিচালিত পানামা খাল পুনর্দখলের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, “এটি আমাদের সঙ্গে করা চুক্তির চেতনা লঙ্ঘন করেছে। এটি আমরা পানামাকে দিয়েছিলাম, চীনকে নয়, এবং আমরা এটি পুনরুদ্ধার করব।”
ট্রাম্পের এসব কঠোর পদক্ষেপে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত ভারতীয়রা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
সায়মা ইসলাম