ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

তীব্র খাদ্য সংকটে ৯১ শতাংশ মানুষ

গাজার চারদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ

প্রকাশিত: ২১:২৩, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

গাজার চারদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণ আগে স্বামী ও দুই সন্তানকে হারিয়ে স্তম্ভিত ফিলিস্তিনী এক নারী

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবে গাজাবাসীদের ঘরবাড়ি একেবারে মাটিতে মিশে গেছে। যেখানে চারদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ। গাজায় এখন বাস্তুহারা ৯০ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে ৯১ ভাগ ফিলিস্তিনি। খবর আলজাজিরার।
গাজা শহর থেকে পালিয়ে জাবালিয়ায় আশ্রয় নেন ৪৩ বছর বয়সী রানা মোহসেন। হাজারো ফিলিস্তিনির মতো তিনিও যুদ্ধবিরতির দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর তিনি রাফাহ নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। তিন সন্তানের জননী মোহসেন বলেন, আমরা ১৬ মাস ধরে এই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তিনি বলেন, আমার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। অবশেষে আমরা আমাদের বাড়িতে পৌঁছেছি। আমাদের বাড়ির কিছুই অবশিষ্ট নেই, চারদিক শুধুই ধ্বংসস্তূপ, তারপরও বলব এটা আমাদেরই বাড়ি। ইসরাইলি বাহিনী পুরো বাড়িটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাড়ির ছাদই কেবল অবশিষ্ট আছে। ধ্বংসের পরিমাণ অকল্পনীয়। ভবনের চিহ্নগুলো সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস হয়ে গেছে, যেন এটি একটি ভূতের শহর বা পরিত্যক্ত শহর।  এদিকে হামাস জিম্মিদের নাম সময়মতো দেয়নি এই অজুহাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যে পৌনে তিন ঘণ্টা দেরি হয়েছিল সেসময়ও ইসরাইলি বিমানের হামলা থেমে ছিল না। সর্বশেষ এ হামলা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে গাজার আল কিদরা পরিবারের তিন সদস্যের, যারা যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে মনে করে নিশ্চিন্তে বাড়ির পথে রওনা হয়েছিল। সোয়া এক বছরের দুঃসহ অভিজ্ঞতা ভুলে নতুন শুরুর প্রত্যয়ে সেই যাত্রাই হলো কাল। তাদের হারিয়ে এখন পরিবারের অন্য সদস্যরাও দিশেহারা। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরাইল আর হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা রবিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায়। সে অনুযায়ীই প্রস্তুত হয়েছিল আল কিদরা পরিবার। তারা ১৫ মাসের ইসরাইলি হামলা সয়েছে। একাধিকবার বাড়ি ছাড়া হয়েছে, থেকেছে তাঁবুতেও। এ দফার যুদ্ধে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে তাদের আত্মীয় স্বজনরাও আছে।

×