ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

প্রথম দিনেই ভাঙতে পারেন নির্বাহী আদেশের রেকর্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

প্রথম দিনেই ভাঙতে পারেন নির্বাহী আদেশের রেকর্ড

.

আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম দিনই রেকর্ড সংখ্যক নির্বাহী আদেশ জারি করবেন বলে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। শনিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অভিষেক ভাষণের পর পরই এসব আদেশ জারির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ঠিক কতগুলো আদেশ জারি করবেন তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে তিনি বলেন, সংখ্যাটি রেকর্ড ভাঙবে। খবর এএফপির
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশগুলোর মাধ্যমে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অনেক নীতি বাতিল করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, অভিবাসনসহ অন্য বিষয়ে প্রথমদিন থেকেই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিষেক অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত ক্যাপিটল ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হলেও এবারের অনুষ্ঠান ইনডোরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়াশিংটনে শীতল আবহাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এটি অনেক মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত।
৮০ বছরের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি উল্টে দিতে পারেন ট্রাম্প ॥ শপথ অনুষ্ঠানের আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সহযোগিতার কথা জানিয়েছিলেন। আর্কটিকে অবস্থিত খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনল্যান্ডকে দখলে নেওয়ার কথা বলেছেন। এতে করে তার দ্বিতীয় মেয়াদ প্রথমবারে চেয়ে যে জটিল হতে চলেছে শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে পররাষ্ট্রনীতি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে তা-ও তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারেন বলে অনেকেই মনে করছেন। খবর দ্য ইকোনমিস্টের কয়েক দশক ধরেই মার্কিন নেতারা যুক্তি দিয়ে আসছেন যে তাদের ক্ষমতার উৎস হলো বিশ্বকে অনেক বেশি স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ডিফেন্ডার হওয়ার দায়িত্ববোধ ও গণতন্ত্রের প্রতি যত্নবান হওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই মূল্যবোধকে খাদে ফেলে দেবেন এবং ক্ষমতাকে ব্যবহার-কেন্দ্রীভূতে বেশি মনোযোগ দেবেন। তিনটি সংঘাতে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরীক্ষিত ও সংজ্ঞায়িত হবে। সেগুলো হলো মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেন ও চীনের সঙ্গে আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধ।
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্যদের চেয়ে আলাদা। প্রথম মেয়াদে তিনি আব্রাহাম চুক্তিতে অবদান রেখেছিলেন। জিম্মি চুক্তিকে ব্যবহার করে তিনি ইসরাইল ও সৌদি আরবের মধ্যে চুক্তিতে অগ্রসর হতে পারেন। যেটাকে তিনি অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করেন। গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় বিপর্যস্ত হয়েছে ইরানের মিত্ররা। এক্ষেত্রেও আসতে পারে চুক্তি।
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ ভ্লাদিমির পুতিনের চেয়ে আমেরিকার মিত্রদের ওপর তার বেশি লিভারেজ রয়েছে। এক্ষেত্রে তার সহজ উপায় হতে পারে কিয়েভের ওপর ছাড় ও সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরক্ষায় ট্রাম্প ন্যাটো সদস্যদের অব্যাহত চাপ দিয়ে যাবেন। যেটা ভালো দিক। তবে এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যাটো ওয়াক আউট, বাণিজ্য নিয়ে বিবাদ, বিদ্রোহী জাতীয় রক্ষণশীল দলগুলোকে সমর্থন ও গ্রিনল্যান্ডের ইস্যু ব্যবহার করে বাঁচতে পারে। আমেরিকার মতো আফগানিস্তানে ডেনমার্কও সেনা হারিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের সঙ্গে বিবাধের কারণে আমেরিকা তাদের কাছে হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
ট্রাম্পের কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও পানামা ইস্যুতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। কারণ বিষয়টি রাশিয়ার জর্জিয়া দখলের লোভ ও দক্ষিণ চীন সাগরকে চীনের দাবির মতো হয়ে যায়। তা ছাড়া ট্রাম্প যদি জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানকে আঘাত করতে থাকেন তা হলে চীন ও রাশিয়া সেখানে আধিপত্য বিস্তার করবে। দেশ দুটি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে।
ট্রাম্প তার প্রশাসনে যেসব ব্যক্তিদের নিয়োগ করেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বিশৃঙ্খলা ছড়াতে পারে। তিনি নিজের স্বার্থকে দেশ থেকে আলাদা করতে অনুপযুক্ত, বিশেষ করে যদি তার ও তার সহযোগীদের অর্থ ঝুঁকিতে থাকে।

×