ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

কে এই আইআইটি বাবা?

প্রকাশিত: ১৯:০১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

কে এই আইআইটি বাবা?

ছবি: সংগৃহীত

মহাকুম্ভ মেলায় ভিড় জমেছে লাখো মানুষের। এই বিশাল ধর্মীয় সমাবেশে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এক ব্যতিক্রমী সাধু, যিনি পরিচিত “আইআইটি বাবা” নামে। তাঁর আসল নাম অভয় সিং, একসময় ছিলেন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইআইটি বম্বের একজন মেধাবী ছাত্র।

 

অভয় সিং ২০০৮-২০১২ সাল পর্যন্ত আইআইটি বম্বেতে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। উচ্চতর ডিগ্রির জন্য শিল্পকলায় ঝোঁক সৃষ্টি হয় তাঁর। ডিজাইনে মাস্টার্স করে কিছুদিন ফটোগ্রাফি এবং ফিজিক্স পড়ানোর কাজেও যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দর্শনশাস্ত্রেও গভীর আগ্রহ জন্মায়। সক্রেটিস, প্লেটোসহ আধুনিক দর্শনের বিভিন্ন শাখা নিয়ে কাজ করেছেন।

তবে জীবনের গভীর অর্থ খুঁজতে গিয়ে অভয় একসময় পুরোপুরি আধ্যাত্মিকতার পথে ঝুঁকে পড়েন। নিজের নাম বদলে তিনি হয়ে ওঠেন “মাসানি গোরখ”। মহাদেব শিবের প্রতি গভীর ভক্তি ও জীবন উৎসর্গের অঙ্গীকার তাঁকে নিয়ে আসে সাধুত্বের পথে।

 

মুখে ঘন দাড়ি, কাঁধ পর্যন্ত ঝাঁকড়া চুল, আর একগাল অমলিন হাসি নিয়ে মাসানি গোরখ বা আইআইটি বাবা এখন মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের জন্য মহাকুম্ভ মেলায় এসেছেন। তাঁর তাঁবুর বাইরে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। আইআইটি থেকে আধ্যাত্মিকতার এই যাত্রা মানুষকে মুগ্ধ করেছে।

নিউজ এইটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইআইটি বাবা বলেন, এটাই আসল জ্ঞান। বাকি সবই অকাজের। মানসিক শান্তি খুঁজতে আধ্যাত্মিকতার চেয়ে বড় মাধ্যম আর কিছু নেই।

 

তিনি আরও বলেন,“জীবনকে গভীরভাবে বোঝার জন্য আমি এই পথ বেছে নিয়েছি। এখন আমি সত্যিকারের সুখ খুঁজে পেয়েছি। এটি জীবনের শ্রেষ্ঠ পর্যায়।

আইআইটি বাবার বক্তব্য ও তাঁর জীবনযাত্রা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কেউ বলছেন, টাকাপয়সার পেছনে না ছুটে জ্ঞানের পথে যাওয়া বিরল। অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, মহাবিশ্বের জ্ঞান থাকার পরেও শূন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। সেটাই চিরন্তন সত্য, যা বাবাজি উপলব্ধি করেছেন।

 

তাঁকে নিয়ে কিছু গুজব ছড়ালেও ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই নিশ্চিত করেছে, অভয় সিং প্রকৃতপক্ষেই আইআইটি বম্বের প্রাক্তন ছাত্র। আইআইটি বম্বের জনসংযোগ অধিকর্তা ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করেছেন।

আইআইটি বাবার জীবন প্রমাণ করে, জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজতে কখনও কখনও প্রচলিত পথ ছেড়ে নতুন পথে যাত্রা করা জরুরি। তাঁর জীবনের এই অধ্যায় অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে লাখো মানুষের জন্য।

 

 

তাবিব

×