ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর “ভালো” একটি ফোনালাপ হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ওয়াশিংটন এবং বেইজিং মিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারবে।
শুক্রবারের এই ফোনালাপটি এমন এক সময়ে হলো যখন ট্রাম্প শপথ গ্রহণের মাত্র তিন দিন আগে হোয়াইট হাউজে ফিরতে যাচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক আরও জটিল করতে পারে।
তবে ট্রাম্প আশাবাদী সুরে বলেছেন, “আমার বিশ্বাস আমরা একসঙ্গে অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারব এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করব। আমরা বাণিজ্য, ফেন্টানিল, টিকটকসহ অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি।”
তিনি আরও যোগ করেছেন, “প্রেসিডেন্ট শি এবং আমি বিশ্বকে আরও শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করতে যা কিছু সম্ভব, তা করব।”
টিকটক এবং বাণিজ্য ইস্যু
গত বছর মার্কিন কংগ্রেস টিকটক নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল পাস করেছিল, যা চীনা মালিকানাধীন এই জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে গোপনীয়তা এবং কন্টেন্ট ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তবে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি এই প্ল্যাটফর্মটি নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখার উপায় খুঁজছেন।
বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক বছরে নানা কারণে আরও খারাপ হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য বৈষম্য, তাইওয়ানের পরিস্থিতি, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবি এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রেখেছিলেন। তিনি বারবার অভিযোগ করেছেন যে, চীনের বাণিজ্য নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যায্য।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি উল্লেখযোগ্য। গত বছর চীন যুক্তরাষ্ট্রে ৪০১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র চীনে রপ্তানি করেছে মাত্র ১৩০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনে চীনবিরোধী অবস্থানধারী অনেক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও, যাকে তিনি সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসাবে মনোনীত করেছেন।
সিনেট শুনানিতে রুবিও চীনকে “যুক্তরাষ্ট্রের সমৃদ্ধির সবচেয়ে বড় হুমকি” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, “যদি আমরা আমাদের নীতি না বদলাই, তবে এমন এক বিশ্বে বসবাস করব যেখানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পর্যন্ত অনেক কিছু চীনের উপর নির্ভর করবে।”
তবে উভয় দেশের কর্মকর্তারা বরাবরই জোর দিয়ে বলেছেন, তারা নতুন করে কোনও শীতল যুদ্ধ চায় না।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা চীন-মার্কিন সম্পর্ককে পারস্পরিক সম্মান, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং উভয় পক্ষের উন্নতির ভিত্তিতে পরিচালনা করি এবং আমাদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন স্বার্থ দৃঢ়ভাবে রক্ষা করি।”
মারিয়া