ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

সাংবাদিকদের প্রতিবাদে ব্লিঙ্কেনের শেষ ব্রিফিংয়ে বিশৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

সাংবাদিকদের প্রতিবাদে ব্লিঙ্কেনের শেষ ব্রিফিংয়ে বিশৃঙ্খলা

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তি চুক্তির ঘোষণা পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের শেষ প্রেস ব্রিফিং বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। বৃহস্পতিবার ব্রিফিং চলাকালে দুই প্রতিবাদকারী সাংবাদিক ব্লিঙ্কেনকে গাজায় "গণহত্যা" চালানোর সহায়তার অভিযোগ করেন, যার ফলে তাদের কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়।

মার্কিন সাংবাদিক ম্যাক্স ব্লুমেনথাল ব্লিঙ্কেনকে চ্যালেঞ্জ করেন যুদ্ধবিরতির চুক্তির সময় নিয়ে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “মে মাসে চুক্তি হওয়ার পরও কেন বোমা বর্ষণ অব্যাহত রাখা হয়েছিল? কেন গাজার আমার বন্ধুদের বাড়ি ধ্বংস হতে দিলেন?” 
   
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জর্ডান-ফিলিস্তিনি সাংবাদিক স্যাম হুসেইনি একই অভিযোগ তোলেন। তিনি বাইডেন প্রশাসনকে ইসরায়েলের কথিত যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। হুসেইনিকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয় এবং পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি চিৎকার করে বলেন, “আপনারা স্বাধীন সাংবাদিকতার কথা বলছেন! আমি শুধু প্রশ্ন করছি, অথচ [মুখপাত্র] ম্যাট মিলার আমাকে বললেন তিনি উত্তর দেবেন না।”

হুসেইনি আরও চিৎকার করে বলেন, “অপরাধী! আপনি হেগে কেন নেই? হেগে কেন নেই?” তার বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দিকে, যেখানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের বিচার হয়।
  
এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেও ব্লিঙ্কেন শান্ত ও সংযত ছিলেন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন যে, প্রতিবাদ শেষ হওয়ার পর তিনি প্রশ্নের উত্তর দেবেন। সাংবাদিকদের উৎসাহে ব্রিফিং চালিয়ে গিয়ে তিনি স্বচ্ছতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে প্রতিবাদ হতে পারে বলে আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিল স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এর জন্য জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং প্রতিবাদকারীদের দ্রুত কক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

পরে ব্লুমেনথাল এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) হুসেইনির প্রশংসা করে তাকে "জাতীয় বীর" হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি লেখেন, “জাতীয় দর্শকদের সামনে, যখন তিনজন সিক্রেট সার্ভিস কর্মকর্তা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, এবং ব্লিঙ্কেন ‘প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান’ জানানোর নির্দেশ দিচ্ছিলেন, স্যাম তখনো ইসরায়েলের গোপন পরমাণু অস্ত্র ও আইসিজে এবং অ্যামনেস্টির (ইন্টারন্যাশনাল) নীতির কথা উল্লেখ করেছেন।”

এই ঘটনাটি মধ্যপ্রাচ্য নীতি নিয়ে ব্লিঙ্কেন এবং অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক একাধিক প্রতিবাদের সর্বশেষ উদাহরণ। এর আগেও গাজায় যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন নিয়ে আটলান্টিক কাউন্সিলে দেওয়া বক্তব্যে ব্লিঙ্কেন তিনবার বাধার সম্মুখীন হন। এক প্রতিবাদকারী তাকে “ব্লাডি ব্লিঙ্কেন” বলে আখ্যা দেন, আরেকজন তাকে “যুদ্ধের দানব” এবং তৃতীয়জন তাকে “গণহত্যার সেক্রেটারি” হিসেবে অভিযুক্ত করেন। 

রাসেল

×