ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

এরদোয়ান-জুলানি জোট: কীভাবে পাল্টা চাল দেবেন নেতানিয়াহু?

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০০:০৪, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

এরদোয়ান-জুলানি জোট: কীভাবে পাল্টা চাল দেবেন নেতানিয়াহু?

ছবি : সংগৃহীত

সৈরশাসক বাসার আল আসাদ পতনের পেরিয়ে গেছে এক মাস। এ সুযোগে সিরিয়ায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। নজিরবিহীন হামলায় গাজার মত ধ্বংসস্তুপের নগরীতে পরিণত হয়েছে হোমস ও দেরা। যদিও মানবতার বাণী পাঠ করে মুখে ফেনা তোলা পশ্চিমারা নির্বাক। এমন পরিস্থিতিতে সিংহের মত হুংকার দিলেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

‘হয় সিরিয়া ছাড়ো, অন্যথায় মারাত্মক পরিণতি ভোগের জন্য প্রস্তুত থাকো’। বুধবার দলীয় সভায় এমন হুশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। দ্রুতই সিরিয়ায় আগ্রাসন বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহারের জন্য ইসরাইলকে আল্টিমেটাম দেন তিনি।

জাস্টিস এন্ড রুলিং ডেভেলপমেন্ট পার্টির বৈঠকে এরদোয়ান জানান, দামেস্কের সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নির্মূলের সক্ষমতা রাখে আঙ্কারা। আইসিস ও কুর্দিস যোদ্ধাদের গোষ্ঠী এসডিএফ এক্ষেত্রে কিছুই নয়। ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকেও তুরস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেন এরদোয়ান। তুর্কি প্রেসিডেন্টের দাবি আইসিস উত্থানের খোঁড়া যুক্তিতে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রকে খাঁটি গাড়তে দেয়া যাবে না। আইসিস এর মত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো যদি সত্যিই এই অঞ্চলে থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক পরাশক্তি হবার কারণে তাদের নিয়ন্ত্রণ করবে তুরস্ক।

এরদোয়ান বলেন, সব দেশকেই এই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সিরিয়ান ভাই-বোনদের সঙ্গে নিয়ে আইসিস, ওয়াইপিজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী দলগুলোকে পিশে ফেলবে তুরস্ক। এরদোয়ানের হুশিয়ারিতে ইমেজ সংকটে ইসরাইল।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, দেশের সীমান্ত ও নাগরিকদের সুরক্ষিত করতে কাজ চালিয়ে যাবে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্টকারী মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে আহ্বান জানানো হয়।

বাশার আল আসাদ পতনের পর সিরিয়া জুড়ে তান্ডব চালায় ইসরাইলি সেনারা। দখল করা হয় দেশটির সবচেয়ে বড় পাহাড় মাউন্ট হের। বাসান অ্যারো নামের অভিযানকে সাময়িক উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এমনকি আশ্বাস দেয়া হয়েছে উদ্দেশ্য পূরণ হলে সিরিয়া ত্যাগ করবে ইসরাইলি সেনারা। তবুও আইডিএফ সেনাদের মাউন্ট হেরমান দখলকে ইসরাইলের জন্য বড় বিজয় হিসেবে অভিহিত করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞ।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে যার অবস্থান। গেল ৫০ বছর ধরে মাউন্ট হেরমান ইসরাইল ও সিরিয়ার মধ্যে বাফার জোন হিসেবে কাজ করছে। তবে বাসারের পতনের পর পাহাড়সহ পুরো বাফার জোনকেই দখল করে নেয় আইডিএফ। নেতানিয়াহুর পুরো উল্টো বক্তব্য দিয়েছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পুরো শীতকাল জুড়ে সেনাদের অবস্থান ধরে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন ইসরাইল কার্ভস। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান তেলাবিবের সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যেই নেয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ।

আসাদ পতনের পর সিরিয়ার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদ্রোহীদের একই পতাকাতলে আনার চেষ্টা করছেন এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মদ আল জোলানী। সিরিয়ার নবনিযুক্ত সরকারের সঙ্গে এরদোয়ান সেনারা একযোগে কাজ শুরু করলে ইসরাইলের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে সংখ্যা প্রকাশ করছে বিশ্লেষকরা।

×