ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে যে রায় দিলেন হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ২২:৫২, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২৩:২২, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে যে রায় দিলেন হাইকোর্ট

সহবাসের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন কোনও বিবাহিত মহিলা যদি বাধা না দেন, তাহলে একজন পুরুষের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ককে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে হয়েছে বলে বিবেচনা করা যাবে না। একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণে এমনই জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৫০৪ (ইচ্ছাকৃত অপমান) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) মতো ধারায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে জামিন দেওয়ার সময় আদালত এই পর্যবেক্ষণ জানায়।

৩০ বছর বয়সি একজন বিধবা মহিলার আনা অভিযোগের রায় দিতে গিয়েই এই নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ওই মহিলার অভিযোগ ছিল, তাঁর ২০ বছর বয়সি দেওর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’বছর ধরে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। শারীরিক সম্পর্কের জেরে তিনি গর্ভবতীও হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। তখন ওই মহিলার দেওর তাঁকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এর পরে দেওর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। থানায় অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। এর পরই অভিযুক্ত যুবক জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন।

যদিও আদালত রায় দিতে গিয়ে জানায়, গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন বলে ওই মহিলা যা দাবি করেছেন, তার স্বপক্ষে কোনও প্রামাণ্য চিকিৎসা অথবা মেডিক্যাল নথি তিনি দেখাতে পারেননি। এমনকি, তদন্ত চলাকালীন তিনি অভ্যন্তরীণ মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রস্তাবও খারিজ করেন বলে জানায় আদালত।

বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিং রায় দিতে গিয়ে উল্লেখ করেন, ওই মহিলা তিন সন্তানের মা। তিনি যে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন, তার নৈতিক দায় কী হতে পারে, সে সম্পর্কে যথেষ্ট অবহিত ছিলেন তিনি। আদালত জানায়, দৃশ্যত কোনও প্রতিরোধ বা বাধা ছাড়া একজন প্রাপ্তবয়স্ক শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে সেই সম্পর্কে তাঁর সম্মতি ছিল বলেই ধরে নিতে হবে। তার উপর এ ক্ষেত্রে অভিযোগের স্বপক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও ছিল না। ওই মহিলার অভিযোগ ছিল জোর করে শারীরিক সম্পর্কের জেরে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। অথচ সেই অভিযোগের কোনও প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। তাই ওই মহিলার বয়ানকে ঘিরেই সংশয় রয়েছে বলেও জানিয়ে দেয় আদালত।

অভিযুক্তের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেল ওই মহিলাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করার পরে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই অভিযোগ করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর বৌদির মধ্যে বয়সের ফারাক অনেকটাই। ওই মহিলা তাঁর দেওরকে বদনাম করতেই এই অভিযোগ এনেছেন।

সওয়াল-জবাবের পর আদালত আবেদনকারী যুবকের জামিন মঞ্জুর করে। আদালত জানায়, যে ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা যা তথ্য প্রমাণ জমা দেওয়া হয়েছে এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির ভিত্তিতেই অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করা হচ্ছে।

 

রাজু

×