ছবি: সংগৃহীত
কখনও যুদ্ধবিমানের গর্জন, কখনও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ ইউক্রেনের একের পর এক শহরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে মস্কো। তবে রুশ ভূখণ্ডে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে কিভ, বিশেষ করে কুর্স্ক এলাকায়। সেখানে ঢুকে ইউক্রেনীয় বাহিনী যেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। যুদ্ধের তৃতীয় বছরে এই অভিযানের উল্লেখ কিভ করেছে ‘প্রতীকী বিজয়’হিসেবে।
কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের দাবি, কুর্স্ক দখল করে রুশ জেনারেলদের মোটেই বিপদে ফেলতে পারেনি ইউক্রেন। শুধু তা-ই নয়, আর্থিক এবং কৌশলগত দিক থেকে এলাকাটি কব্জা করে কিভ যে দুর্দান্ত লাভবান হয়েছে, এমনটাও নয়। বরং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির ওই পদক্ষেপ মস্কোকে অত্যাধুনিক হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের দরজা খুলতে সাহায্য করেছে।
গত বছরের (পড়ুন ২০২৪) ৬ অগস্ট প্রথম বার কুর্স্কে আক্রমণ শানায় জ়েলেনস্কির সেনা। ইউক্রেনীয় ফৌজের কাছে এটা ছিল অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। এর জন্য কামান বাহিনীকে একত্রিত করে দ্রুত সুসংহত আক্রমণ শানায় তারা। ফলে খুব অল্প দিনের মধ্যেই রাশিয়ার সুদজ়া শহর-সহ ১,২৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চলে যায় কিভের দখলে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, কুর্স্ক আক্রমণের মধ্যে দিয়ে ইউক্রেনীয় জেনারেলরা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন। প্রথমত, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব ফ্রন্ট থেকে রুশ সেনাকে অন্যত্র সরতে বাধ্য করা। দ্বিতীয়ত, ডনবাস এলাকায় পুতিন ফৌজের সাঁড়াশি আক্রমণ থেকে বাঁচতে চাইছিলেন তাঁরা।
‘অপারেশন কুর্স্ক’-এর প্রাথমিক সাফল্যের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জ়েলেনস্কির প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। অতি উৎসাহে তাঁর ফৌজ রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের আরও কিছুটা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে মস্কোর পাতা ফাঁদে ইউক্রেনীয় সেনারা জড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশ।
সূত্রের খবর, কুর্স্ক পুনরুদ্ধার করতে অতিরিক্ত ৫০ হাজার সৈন্য ওই রণাঙ্গনে পাঠিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে উত্তর কোরিয়ার ১২ হাজার সেনা। মস্কোর সঙ্গে বিশেষ ফৌজি চুক্তির জেরে যা ইউক্রেনের রণাঙ্গনে পাঠিয়েছেন পিয়ংইয়ংয়ের সুপ্রিম লিডার কিম জং-উন। জ়েলেনস্কি-সেনাকে এই যৌথবাহিনী ঘিরে ফেলেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
পাশাপাশি, কুর্স্কে ইউক্রেনীয় সেনাকে নাস্তানাবুদ করতে বিমানবাহিনীকে পুরোদস্তুর কাজে লাগাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিন দিক থেকে রণাঙ্গণে ঢুকতে শুরু করেছে মস্কোর ট্যাঙ্ক। পিছন থেকে তাঁদের মদত জুগিয়ে চলেছে ক্রেমলিনের গোলন্দাজেরা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই চাপ সহ্য করা জ়েলেনস্কির ফৌজের পক্ষে কঠিন।
রাসেল