
গেল কদিন ধরেই বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল বাংলাদেশ ভারতের।এবার বাংলাদেশের উত্তেজনার পারদ না থামতেই দেখা দিয়েছে, ভারত চীন দ্বন্ব।
ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যমের দাবি আবারো প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা এলএসির কাছে বড় আকারের সেনা মহড়া চালাল বেজিং।যেটাকে ইতোমধ্যে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের বরাতে বলা হয়েছে,যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে বেইজিং।গণমাধ্যমটির আরো দাবি বরফে ঢাকা এলএসিতে অত্যধিক উচ্চতায় পিপল লিবারেশন আর্মির ঝিংজিয়ান সেনা কমান্ডোর একটি রেজিমেন্ট যুদ্ধ মহড়া সম্পন্ন করেছে। লাদাখের মতো চরম আবহাওয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের প্রস্তুত করতেই এই অনুশীলন।ভারতীয় এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সতর্ক অবস্থানে চলে গেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
পাশাপাশি যুদ্ধের সময়ে দ্রুত রণাঙ্গনে সৈনিকদের কাছে গোলা-বারুদ এবং রসদ পৌঁছে দেওয়ার অভ্যাসও চালিয়েছে তারা।
ইতোমধ্যে ভারতের অন্য আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য ওআইআর এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়,ভারতের সেনাপ্রধান বলছেন,লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল কিন্তু সংবেদনশীল।
তার পরপরেই ভারতের সামরিক অনেক বিশ্লেষকরা বলছেন,ভারত বিষয়টি সংবেদনশীল বলা মানেই বিষয়টি গুরতর ।আগে থেকেই লাদাখ যেহেতু চীন দাবি করে আসছিল,তাই এই অঞ্চলে বড়সড় যুদ্ধ যেকোন সময় বেঁধে যেতে পারে।তাঁরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনি কৌশলি ভূমিকা পালন করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথে আসতে হবে। নাহলে চীন যেকোন সময় এ অঞ্চল দখল করে নিতে পারে।যেটাকে তাঁরা চীনের উস্কানি হিসাবে দেখছেন।চীন এসময়ে এখানে সামরিক মহড়া করা মানে চীন এ অঞ্চল দখলে মরিয়া হয়ে আছে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ‘মিলিটারি অ্যান্ড সিকিউরিটি ডেভেলপমেন্টস ইনভলভিং দ্য পিপল্স রিপাবলিক অফ চায়না’ শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন। সেখানে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের গলওয়ান সংঘর্ষের পর এলএসি-তে সৈন্য সমাহার মোটেই হ্রাস করেনি বেইজিং। লাদাখ থেকে অরুণাচল পর্যন্ত ৩,৪৮৮ কিলোমিটার বিস্তৃত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পিপল্স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে অঞ্চলটিতে।এর পাশাপাশি, এলএসি-তে চিনের সেনা কী কী হাতিয়ার জমা করেছে, তারও বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে পেন্টাগনের রিপোর্টে। আমেরিকার দাবি, ওই এলাকায় মোতায়েন থাকা পিএলএ অফিসার ও জওয়ানদের কাছে রয়েছে ট্যাঙ্ক, কামান, ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য উন্নত সামরিক সরঞ্জাম।
পেন্টাগনের রিপোর্টের সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হল, পিএলএ-র অন্তত ২০টি সম্মিলিত অস্ত্র ব্রিগেডের (কমবাইন্ড আর্মস ব্রিগেড বা সিএবি) উপস্থিতির উল্লেখ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পূর্ব, পশ্চিম এবং মধ্যবর্তী একাধিক কৌশলগত এলাকায় যুদ্ধের জন্য তাদের মজুত রেখেছে ড্রাগন। সংঘর্ষ বাধলে লাদাখ বা অরুণাচলের জমি কব্জা করার ক্ষেত্রে ওই ব্রিগেডকে তুরুপের তাস হিসাবে ব্যবহার করতে পারে বেইজিং।
আমেরিকার জারি করা রিপোর্টকে কেন্দ্র করে আগে বিবৃতি দিয়েছিল চীন। বেইজিং এর মুখপাত্র তখন বলেছিলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যে ভাল হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের সহ্য হচ্ছে না। আর তাই উস্কানি দিতে এই ধরনের ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।’’ আমেরিকাকে ‘যুদ্ধবাজ’ দেশ বলে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি।
তবে সাম্প্রতিক মহড়া নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি জিনপিং প্রশাসন।তাই ভারত মনে করছে চীন ভারতের সাথে বড়সড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সুত্র: ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া ডটকম, দ্য ওয়্যার
ফুয়াদ