ছবি: সংগৃহীত
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তান নতুন করে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। সে সময় জিডিপি ২০.৭ শতাংশ সংকুচিত হয়, যা ২০২২ সালের প্রথম দিকে আরও ৬.২ শতাংশে পৌঁছায়।
তবুও পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে শুরু করে। অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ে, যা ২০২২ সালের মধ্যে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়।
দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ২০২২ সালের জুনে যেখানে ১৮.৩ শতাংশ ছিল, তা নভেম্বরে নেমে আসে ৯.১ শতাংশে। রপ্তানি আয়ে বড়সড় পরিবর্তন ঘটে; ২০২১ সালে যা ছিল ৮০০ মিলিয়ন ডলার, তা দুই বছরের মধ্যে বেড়ে ১.৭ বিলিয়নে পৌঁছায়। একই সময়ে রাজস্ব আদায়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
তালেবান সরকার মাদক চাষ বন্ধ করে কৃষিকে অগ্রাধিকার দেয়। আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ কমিয়ে এর পরিবর্তে জাফরান ও গম চাষে মনোযোগ দেয়। বর্তমানে আফগানিস্তান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাফরান উৎপাদক। এছাড়া ডালিমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানিতেও সাফল্য এসেছে।
স্থানীয় মুদ্রার ওপর জোর দিয়ে ডলার ও পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার বন্ধ করা হয়। পাশাপাশি, অনলাইন ব্যবসা নিষিদ্ধ করা এবং অর্থ পাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আফগানিস্তানের মুদ্রা ‘আফগানি’ বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম স্থিতিশীল মুদ্রাগুলোর মধ্যে রয়েছে।
লিথিয়ামসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগাতে তালেবান সরকার চীনের সাথে একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চীনের ২০টিরও বেশি কোম্পানি আফগানিস্তানের খনি খাতে কাজ করছে। এ ছাড়া কৃষি উন্নয়নে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নে তালেবান প্রশাসন জোর দিয়েছে, যার ফলে লাখ লাখ হেক্টর জমি উৎপাদনক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সংকোচনের ধারা থেকে বেরিয়ে আসা আফগান অর্থনীতি ২০২৫ সালে ২-৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। আন্তর্জাতিক সহায়তা ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়ানোর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/l94k9kuM5UI?si=aZAhd4jz01qYeahw
এম.কে.