ছবি সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে। যেসব এলাকায় দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন, সেসব জায়গায় ফিরতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। তবে অধিকাংশ জায়গায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় বহু মানুষ এখনো ফেরার সুযোগ খুঁজছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ভয়াবহ দাবানলকে বর্ণনা করেছেন যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, “এই দৃশ্য আমাকে যুদ্ধক্ষেত্রের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেন বোমা মেরে একটি শহর পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।”
গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবানলের আগের ও পরের লস অ্যাঞ্জেলেসের দৃশ্যগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ একে তুলনা করছেন পারমাণবিক বিস্ফোরণের সঙ্গে, আবার কেউ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা গাজা উপত্যকার ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
মাইলের পর মাইল এলাকা এখন ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছে। শহরের বাসিন্দারা তাদের পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি দেখতে এসে আবেগে ভেঙে পড়ছেন।
দম্পতি ডেমিনা ও লিচটেনবার্গ তাদের ধ্বংস হওয়া বাড়ির সামনে একটি গোলাপ রেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, “আমরা আমাদের ঘরটিকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। এখান থেকে আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হবে।”
৬৯ বছর বয়সী মাকাস ডাসিগেনিস নিজের এবং প্রতিবেশীদের ঘর রক্ষা করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, “আমি জানতাম চেষ্টা করলে এটা সম্ভব। দুই দিন নির্ঘুম থেকে পাইপের মাধ্যমে সুইমিং পুলের পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।”
লস অ্যাঞ্জেলেসের পাঁচটি কাউন্টিতে এখনও দাবানল জ্বলছে। ফায়ার ফাইটাররা আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন। দমকা বাতাস পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। এই দাবানলে এখন পর্যন্ত ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৪০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দাবানল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্ষতিগ্রস্তরা আশা করছেন, পুনর্গঠনের মাধ্যমে তাদের শহর আবার নতুনভাবে গড়ে উঠবে।
আশিক