ছবি : সংগৃহীত
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেসের একাধিক অংশে ছড়িয়ে পড়ে দাবানল। আগ্রাসী আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে লাখো ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি। আগুনে সব নিঃশেষ হয়ে যেতে দেখাই শুধু নয়, লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে গিয়ে জানজট, প্রকট ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসাসহ নানান জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এবারকার দাবানল পুরো লস এঞ্জেলেসকে যেন তছনছ করে ফেলেছে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১ লাখ ৮০,০০০ এর বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়েছেন। দাবানলে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। আগুন ধোঁয়া ও ধ্বংসাবশেষ-এর মাঝেও অন্য যে প্রসঙ্গটি বারবার উঠে এসেছে তা হলো, উদ্ধার তৎপরতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।
সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোন দেশের তুলনা হয় না। এদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনন্য। তবে এমন শক্তিধর রাষ্ট্রটি এখন আগুনের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। দাবানলের ঘটনায় লস এঞ্জেলস কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারির পাশাপাশি বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদে যাওয়ার আদেশ জারি করলে বাসিন্দারা দ্রুত সাড়া দেন। অনেকে সরকারি আদেশ পাওয়ার আগেই ঘরবাড়ি ছেড়ে যান। তবে তারা খুব বেশিদূর যেতে পারেননি। তারা যখন এলাকা ছেড়ে নিরাপদে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তখন রাস্তায় তাদের গতি খুবই ধীর ছিল।
বুধবার প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকার বাসিন্দারা যখন পালাচ্ছিলেন তখন মালিপুর দিকে যাওয়া প্রধান সড়ক প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে জানজটের কবলে পড়ে। অনেক মানুষ রাস্তায় তাদের গাড়ি রেখে সামনে হেঁটে আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন।
এদিকে অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে সেই পরিত্যক্ত গাড়ির জটে পড়লে তারা রাস্তা ফাঁকা করতে বুলডোজার ব্যবহার করেন।
প্যাসিফিক প্যালিসেটস কমিউনিটি কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান মারিয়াম জার জানান, আগুনের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এই গাড়িগুলো বাঁধার মুখে পড়ে। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে কেউই চলাচল করতে পারেনি। আমি ৪৫ মিনিট ধরে রাস্তায় আটকে ছিলাম।
তিনি বলেন, প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল। এটি সম্পূর্ণ ধ্বংসযোগ্য এক নারকীয় পরিস্থিতি।
তিনি আরো জানান, সেখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও সংকটের আরেকটি অন্যতম কারণ। সেখানে প্রধান সড়ক দুটি আর সরু আরেকটি রাস্তা। এই তিনটি পথ ধরেই সবাইকে প্যালেসেস থেকে বের হতে হবে। যেকোনো সময় জানজট লেগে সড়ক বন্ধ হয়ে যাবে। আর আগুন আমাদের শেষ করে দেবে এ ভয়েই আতঙ্কিত করেছে সবাইকে।
মো. মহিউদ্দিন