ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। দীর্ঘদিনের বাধা কাটিয়ে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। এখন অনলাইন আবেদন করলেই সহজে বাংলাদেশের ভিসা পাবেন পাকিস্তানিরা।
পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইকবাল খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রোববার (১২ জানুয়ারি) লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এলসিসিআই)-তে এক সভায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে ভালবাসাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী এবং বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়া এখন সময়ের দাবি।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে এলসিসিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ভিসা জটিলতা দূর হওয়ায় দুই দেশের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বাড়বে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কারণে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলেও সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি। ফলে গত কয়েক বছর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
তবে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। শিক্ষার্থী জনতার অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন, এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন ড. মুহম্মদ ইউনূস।
গত মাসে মিসরের কায়রোতে ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বৈঠক করেন। সেখানে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিশেষ করে রাসায়নিক দ্রব্য, সিমেন্ট, চিকিৎসা ও সার্জিক্যাল উপকরণ, চামড়া শিল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান তারা। সেই বৈঠকে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়টি শেহবাজ শরিফ তুলে ধরেন। ড. ইউনূস এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ডি-৮ সম্মেলনের এক মাসের মধ্যেই ভিসা জটিলতা দূর হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: জিও নিউজ
তাবিব