ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১

জর্ডান ও ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের নিন্দা

বৃহত্তর ইস-রা-য়েলি মানচিত্র প্রকাশ

প্রকাশিত: ২০:১৭, ১০ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২০:২৬, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

বৃহত্তর ইস-রা-য়েলি মানচিত্র প্রকাশ

ছবি : সংগৃহীত

কয়েকটি আরব দেশের ভূখণ্ডকে কথিত বৃহত্তর ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করে তেল আবিব সম্প্রতি যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জর্ডান সরকার ও ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ।

গত বছর জানুয়ারিতে ইসরাইলি লেখক আভি লিপকিনের বৃহত্তর ইসরাইলের ধারণা নিয়ে বিবৃতি দেয়া একটি সাক্ষাৎকার বেশ ভাইরাল হয়। এরপর লেবাননে ইসরাইলে অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহত্তর ইসরাইলের ধারণাটি আবারো সামনে আসে।

এর একটি কারণ হলো গাজায় স্থল অভিযানের সময় কিছু সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে দাবি করা হয়েছিল যে কিছু ইসরাইলি সৈন্য তাদের ইউনিফর্মে বৃহত্তর ইসরাইল মানচিত্র যুক্ত ব্যাচ পড়েছিল। চলতি সপ্তাহে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি মানচিত্রের ছবি। যার মধ্যে দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড কথিত বৃহত্তর ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ নিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি আরব দেশগুলোর সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করছে। 

রামাল্লাহ ভিত্তিক ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনে ইসরাইলি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই মানচিত্রকে সকল আন্তর্জাতিক আইন ও প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ইসরাইলের দখলদারিত্ব নীতি, অবৈধ বসতি স্থাপনাকারীদের হামলা এবং আল আকসা মসজিদের বিরামহীন অবমাননা বন্ধ করতে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সমাজের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। ফিলিস্তিনের এই মুখ্যপাত্র ইসরাইল এর সকল কর্মকাণ্ডের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন বন্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন ইসরাইলি নীতি ও পদক্ষেপ গুলো পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলছে।

এদিকে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরাইলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত মানচিত্রকে উস্কানিমূলক ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

মন্ত্রণালয়টির মতে বর্ণবাদের ভিত্তিতে নেয়া ইসরাইলি পদক্ষেপ যেমন জর্ডানের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারবে না, তেমনি তা ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারও লঙ্ঘন করতে পারবে না।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, ইসরাইল সরকারকে অবিলম্বে এ ধরনের উস্কানিমূলক পদক্ষেপ ও বেপরোয়া বক্তৃতা, বিবৃতি বন্ধ করতে হবে। কারণ এসব পদক্ষেপ কেবল পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করবে।

উল্লেখ্য যে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে ১৯৪৮ সালে গড়ে ওঠে ইসরাইল রাষ্ট্র। এরপর গত সাত দশকে ফিলিস্তিনের ৯৫শতাংশ এলাকা দখল করেছে জায়নবাদী রাষ্ট্রটি। বর্তমানে ফিলিস্তিন বলতে একচিলতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরকে বোঝায়। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এরপর সম্প্রতি লেবাননে সিরিয়া ও ইয়েমেনেও শুরু করেছে সামরিক আগ্রাসন। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইল দখলদারিত্বের মাধ্যমে তার পরিধি বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়েই মূলত মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে একাধারে হামলা পরিচালনা করছে।

মো. মহিউদ্দিন

×