ছবি: ইন্টারনেট
জার্মানির হাউজিং, নগর উন্নয়ন ও নির্মাণ বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিতে প্রায় ৫ লক্ষ ৩১ হাজার ৬০০ জনের স্থায়ী আশ্রয় নেই।
জার্মানির দ্বিতীয় গৃহহীনতা রিপোর্ট অনুযায়ী, জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৪ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫০০ জন জরুরি আশ্রয় সহায়তা ব্যবস্থায় বাস করছেন। এর বাইরে আরও ৬০ হাজার ৪০০ জন আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিতদের কাছে অবস্থান করছেন। তবে বহু মানুষ রাস্তা বা অস্থায়ী আবাসস্থলে বাস করছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, "মোট প্রায় ৫ লক্ষ ৩১ হাজার ৬০০ গৃহহীন ব্যক্তি জার্মানিতে বসবাস করছেন।"
২০২২ সালে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশের সময় প্রায় ২ লক্ষ ৬৩ হাজার গৃহহীন রেকর্ড করা হয়েছিল। নতুন প্রতিবেদনে গৃহহীনতার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
ফেডারেল মন্ত্রণালয়ের মতে, প্রথম প্রতিবেদনে তথ্য কম রিপোর্ট করা হয়েছিল, যা এখন সংশোধন করা হচ্ছে।
এছাড়া, নতুন রিপোর্টে প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯০০ ইউক্রেনীয় শরণার্থীও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা উপযুক্ত আশ্রয়ের অভাবে শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। এদের অধিকাংশই পূর্ববর্তী জরিপের পর জার্মানিতে এসেছেন।
মহামারি কোভিড-১৯-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গৃহহীন পুরুষ, এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
জার্মানির আবাসন, নগর উন্নয়ন ও নির্মাণ মন্ত্রী ক্লারা গেইভিৎস জানিয়েছেন, "এই রিপোর্ট দেখায় যে গৃহহীনতা বিভিন্ন রূপ নেয় এবং বিভিন্ন কারণে ঘটে। এটি শহরকেন্দ্রিক কোনো সমস্যা নয়।"
সরকারের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে গৃহহীনতা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা। এই লক্ষ্যে ২০২৮ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ইউরো সামাজিক আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
গৃহহীনতার কোনো আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সংজ্ঞা নেই এবং একেক দেশে পরিসংখ্যানের সংজ্ঞা আলাদা।
ইউরোপের একটি সংগঠন জানায়, প্রতি রাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ গৃহহীন অবস্থায় থাকেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলে ধারণা করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। জার্মানির কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার সংখ্যা ২০০৯ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর সবচেয়ে বেশি, বৃহস্পতিবার হাল্লে ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক রিসার্চ (আইডাব্লিউএইচ) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী। জার্মানির রসায়ন শিল্পের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানও ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে কম। এই শিল্পটি যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক হিসেবে বিবেচিত, এটি অর্থনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক প্রবণতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিতে পারে। উচ্চ কর, শক্তির দাম এবং বেলাগাম শাসনব্যবস্থা কোম্পানিগুলোর উপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে, যার ফলে প্রতিযোগিতার অভাব দেখা দিয়েছে। অর্ডার কমে গেছে এবং রসায়ন প্লান্টগুলির সক্ষমতা ব্যবহারের হারও কমে গেছে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
নাহিদা