ছবি: সংগৃহীত
ভারত ও পাকিস্তানের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইন্দুস নদী বর্তমানে সোনা বহন করার জন্য আলোচিত হচ্ছে। প্রাচীন সভ্যতার আধার এই নদী এখন সোনার বৃহৎ উৎস বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে।
ইন্দুস নদী ছিল সিন্ধু সভ্যতার (৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকে ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্ব) প্রধান কেন্দ্র। তবে এখন, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বিশেষ করে আত্তক জেলার কাছে এই নদীতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সোনা এবং মূল্যবান খনিজ পাওয়া গেছে।
৬০০ বিলিয়ন রুপির সম্পদ!
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তরের পর্বত এলাকা থেকে দ্রুতগামী পানি সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান খনিজ বহন করে নিয়ে এসে ইন্দুস নদীর তলায় জমা করে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, শুধুমাত্র পাঞ্জাব প্রদেশেই নদী থেকে দৈনিক প্রায় ৬০০ বিলিয়ন রুপি মূল্যের সোনা সংগ্রহ সম্ভব। তবে বেআইনি খননের কারণে এই খনিজের বড় অংশ সরকারের হাতে পৌঁছায় না।
পাঞ্জাব প্রদেশের হোম ডিপার্টমেন্ট নদীর তীরবর্তী সোনা আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং ধারা ১৪৪ প্রয়োগ করে খনন কার্যক্রম বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু শীতকালে পানি স্তর কমে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা অবৈধভাবে সোনা আহরণ শুরু করে। ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই কাজ করা হয় বলে অভিযোগ।
ইন্দুস নদীর সোনার উৎস কী?
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৬-১০ মিলিয়ন বছর আগে হিমালয় গঠনের সময় দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে সোনা সমৃদ্ধ পলল তৈরি হয়। সেই পলল ইন্দুস নদীর মাধ্যমে নিচে নেমে নদীর তীরবর্তী এলাকায় জমা হয়েছে।
পাকিস্তানের দৈনিক "ডেইলি পার্লামেন্ট টাইমস"-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সোনা জমার পরিমাণ ৩২.৬ মেট্রিক টনের সমান হতে পারে। এটি প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত, যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি।
পাঞ্জাব প্রদেশের খনন মন্ত্রী ইব্রাহিম হাসান মুরাদ বলেছেন, ইন্দুস নদীর এই সোনা পাকিস্তানের আর্থিক সংকট দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ইন্দুস নদী সিন্ধু সভ্যতার উন্নতির মূল উৎস ছিল এবং এটি রিগ্বেদেও উল্লেখ রয়েছে। হিমালয় থেকে প্রবাহিত এই নদী হাজার হাজার বছর ধরে সোনা বহন করে এসেছে।
অবৈধ সোনা আহরণের সমস্যা সমাধানে এবং সরকারি কোষাগারে এই মূল্যবান খনিজের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইন্দুস নদীর এই প্রাকৃতিক সম্পদ দেশটির অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র: ইন্ডিয়া.কম
নাহিদা