ছবি: সংগৃহীত
ডেনমার্কের রাজা ফ্রেডেরিক এক্স যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানিয়ে নতুন রাজকীয় প্রতীক চালু করেছেন, যা গ্রিনল্যান্ড ও ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের প্রতি ডেনমার্কের দৃঢ় অবস্থানের প্রতীক।
মাত্র এক বছর আগে রানী মার্গারেথ সিংহাসন ছাড়ার পর ক্ষমতায় আসা রাজা ফ্রেডেরিক এক্স তার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গ্রিনল্যান্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহকে কার্যত প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত মাসে ট্রাম্প আবারো ঘোষণা দেন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হিসেবে গ্রিনল্যান্ডকে দেখতে চান। এই প্রেক্ষিতে ডেনমার্কের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ আলোচিত হয়েছে।
নতুন রাজকীয় প্রতীকে ঐতিহাসিক তিনটি মুকুট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর পরিবর্তে গ্রিনল্যান্ডের প্রতীক হিসেবে একটি মেরুভালুক এবং ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের প্রতীক হিসেবে একটি ভেড়া স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে। ডেনিশ রাজপরিবার জানিয়েছে, এই পরিবর্তন কমনওয়েলথের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য করা হয়েছে এবং তিনটি মুকুট এখন "প্রাসঙ্গিক নয়"।
রাজা ফ্রেডেরিক তার প্রথম নববর্ষের ভাষণে বলেন, “আমরা সবাই ডেনমার্কের রাজ্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ। দক্ষিণ শ্লেসভিগ থেকে গ্রিনল্যান্ড পর্যন্ত—আমরা একে অপরের অংশ। আমরা এই ঐক্য রক্ষা করব।”
ডেনমার্কের এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে চলমান আলোচনার প্রেক্ষাপটে ডেনমার্কের শক্তিশালী বার্তা। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ সেবাস্টিয়ান ওল্ডেন-ইয়োরগেনসেন বলেন, “যখন গ্রিনল্যান্ড এবং ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতার দিকে ঝুঁকছে, তখন এই প্রতীক রাজ্যের ঐক্য রক্ষার একটি পরিষ্কার বার্তা।”
ডেনমার্কের এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের একটি প্রত্যুত্তর হিসেবেও দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প সম্প্রতি তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বলেন, “গ্রিনল্যান্ড যদি আমাদের অংশ হয়, তাহলে এটি অভূতপূর্ব সুবিধা পাবে। আমরা একে রক্ষা করব এবং আরও উন্নত করব। মেইক গ্রিনল্যান্ড গ্রেট এগেইন!”
এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ব্যক্তিগত সফরে গ্রিনল্যান্ডে যান এবং পডকাস্টের জন্য উপাদান সংগ্রহ করেন। তবে তার এই সফর গ্রিনল্যান্ডের স্থানীয় প্রশাসন এবং ডেনিশ সরকারের কাছে বিশেষভাবে অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়।
রাজকীয় বিশেষজ্ঞ লার্স হভবাকে সোরেনসেন বলেন, “এই পরিবর্তন শুধু রাজা ফ্রেডেরিকের আর্কটিক বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে না, বরং ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিদের প্রতি একটি শক্তিশালী জবাব দেয়। এটি বোঝায় যে গ্রিনল্যান্ড এবং ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের ওপর ডেনমার্কের অধিকার নিয়ে কোনো আপস হবে না।”
মারিয়া