তুরস্ক আবারও বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী একসঙ্গে তিনটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে। তুরস্কের নৌ বাহিনী দেশীয় নকশায় একটি সাবমেরিন, একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার এবং বহুল প্রত্যাশিত টিএফ-2000 এয়ার ডিফেন্স ডেস্ট্রয়ার নির্মাণ করবে। এই যুদ্ধজাহাজগুলো তুরস্কের রাজনৈতিক ও নৌ উচ্চাকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করবে এবং সাগরপথে আরও ক্ষমতাশালী করে তুলবে ন্যাটোর সদস্য তুরস্ককে।
প্রতিরক্ষা বিষয়ক একটি অনলাইন নিউজ সাইটের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে ৩১টি নৌযান নির্মাণাধীন রয়েছে তুরস্কে। এই নতুন তিনটি যুদ্ধজাহাজসহ অন্যান্য নৌযান কমিশন হলে তুরস্কের নৌ শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। তুরস্ক তার জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিদেশি আমদানি কমিয়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে জাহাজ তৈরি করতে চায়।
গোলচুক নেভাল শিপইয়ার্ডে সাবমেরিন তৈরির কাজ চলছে। এই সাবমেরিনটি ডিজেল-ইলেকট্রিক পদ্ধতিতে চলবে, যার ওজন হবে ২,৭০০ টন এবং দৈর্ঘ্য ৮০ মিটার। এতে এয়ার-ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোপালশন (AIP) ব্যবস্থা থাকবে, যা এটিকে বিদ্যমান সাবমেরিনগুলোর তুলনায় বেশি সময় ধরে ডুবে থাকার সক্ষমতা দেবে। এছাড়া, সাবমেরিনে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অস্ত্র ব্যবহৃত হবে।
টিএফ-2000 ক্লাস ডেস্ট্রয়ারটি গাইডেড ও ব্যালিস্টিক মিসাইল শনাক্ত করে ভূপাতিত করার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে CODOG প্রোপালশন সিস্টেম থাকবে, যা ২৬ নট গতিতে চলতে সক্ষম। এ যুদ্ধজাহাজে ১২৭ মিমি মেইন গান, দুটি ২৫ মিমি দূরনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র স্টেশন এবং ৩৫ মিমি Gökdeniz ক্লোজ-ইন অস্ত্র ব্যবস্থা থাকবে। অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম ৪৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা মিসাইলও শনাক্ত করতে পারবে। এছাড়া, এতে সাইপার ও হিসার এয়ার ডিফেন্স মিসাইল থাকবে।
তুরস্কে নতুন নির্মিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারটি তুরস্কের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ TCG Anadolu-র চেয়ে দ্বিগুণ আকারের হবে। এতে শর্ট টেকঅফের ব্যবস্থা থাকবে এবং সিঙ্গেল রানওয়ে সহ STOBAR কনফিগারেশন থাকবে। যুদ্ধজাহাজটিতে ১২-১৪ ডিগ্রি কোণের স্কি জাম্প সুবিধা থাকবে, যা এই জাহাজকে আরও সক্ষম করবে।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতে এসব উদ্ভাবন আন্তর্জাতিক বাজারে তাক লাগিয়ে দিয়েছে, এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলো তুরস্কের এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
আর কে