ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বড় ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার সকালের দিকে এই হামলা চালানো হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত একজনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। অন্যদিকে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও তিনজন। এদিকে রাশিয়ার অব্যাহত হামলা ঠেকাতে উন্নত মানের লেজার অস্ত্র তৈরির কথা জানিয়েছে ইউক্রেন। মূলত ড্রোন ভূপাতিত করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিয়েভ। এই লেজার অস্ত্র, এক মাইল দূরে আকাশের লক্ষ্যবস্তুকে হামলা করতে পারে। খবর আরটির।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো বলেন, রাশিয়া আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এক্ষেত্রে কিনজাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ইসকান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। রাশিয়া জানিয়েছে, পশ্চিমাদের অস্ত্র ব্যবহার করে চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালায় ইউক্রেন। এর জবাবেই মূলত এই হামলা চালানো হলো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পশ্চিমাদের সহায়তায় ইউক্রেনের চালানো হামলার জবাবে আজকে দীর্ঘ পাল্লার উপযুক্ত অস্ত্র দিয়ে সমন্বিত হামলা করা হয়েছে। এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা রাশিয়ার জন্য পরাজয়, এমন ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সিরিয়ায় আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। নয় বছরের বেশি সময় আগে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের হটিয়ে দিতে আসাদ সরকারকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিতে ছুটে গিয়েছিল রাশিয়া। মূলত রাশিয়ার সহায়তা আসাদের সামরিক বাহিনীকে গৃহযুদ্ধে সুবিধা পেতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরুতে বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারকে উৎখাত করে। এরপর রাশিয়ায় পালিয়ে যান আসাদ। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের ড্রোন ধ্বংসে লেজার অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে রাশিয়া। এবার এ সক্ষমতা অর্জন করল প্রতিপক্ষ ইউক্রেন। লেজার অস্ত্রটির নাম ট্রাইজুব। চলতি সপ্তাহে ইউরোপ প্রতিরক্ষা শিল্প সম্মেলনে অস্ত্রটি প্রকাশ্যে এনেছে ইউক্রেন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ইউক্রেনের মনুষ্যবিহীন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার ভøাদিম সুখরেভস্কি বলেছেন, আজ আমরা ইতোমধ্যেই এই লেজারের সাহায্যে দুই কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় বিমানে গুলি করতে পারি। এটি সত্যিই কাজ করে, এটি সত্যিই বিদ্যমান। সুখরেভস্কি আরও বলেন, আমি যদি ভুল না করি তা হলে ইউক্রেন এমন পঞ্চম দেশ যার কাছে লেজার অস্ত্র রয়েছে। আমরা এখন এ কথা বুক ঠুকে বলতে পারি। ইউক্রেন নিজেই এই অস্ত্র তৈরি করেছে নাকি অন্য কোনো দেশ সাহায্য করেছে তা স্পষ্ট নয়। এই অস্ত্রটি ৫০ কিলোওয়াটের রশ্মি সহ আক্রমণকারী ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান এবং এমনকি উপগ্রহগুলোকে গুলি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এমনকি এটি এক টাকার মুদ্রার আকারের লক্ষ্যকেও আঘাত করতে পারে। এর পরিসীমা সম্পর্কে তথ্য খুবই গোপন। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে। লেজার টার্গেটকে তাৎক্ষণিকভাবে ৩ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি গরম করে। এ ছাড়া বন্দুকের মতো এতেও গুলি ফুরিয়ে যায় না। যতদিন বিদ্যুৎ থাকবে ততদিন কাজ চলবে।
রুশ আক্রমণ ঠেকাতে উন্নত লেজার অস্ত্র তৈরি করল ইউক্রেন
কিয়েভে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
শীর্ষ সংবাদ: