ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হওয়ার পর কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোট তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। অমিত শাহের মন্তব্যের কারণে ভারতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ভারতীয় পার্লামেন্টের দুই কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভা একইসময়ে অচল হয়ে পড়েছে।
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন।
মঙ্গলবার সংসদে সংবিধানের ৭৫ বছর উদযাপনের আলোচনার সময় অমিত শাহ বলেন, "এখন আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর বলা যেন এক ধরণের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি তারা ঈশ্বরের নাম এভাবে নিত, তাহলে সাত জন্ম ধরে স্বর্গে জায়গা পেত।"
এই মন্তব্যের একটি অংশ প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেস অভিযোগ করে, এটি সংবিধান প্রণেতা ড. বি.আর. আম্বেদকরকে অপমান। এ জন্য শাহের পদত্যাগ এবং ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করে তারা।
বিতর্কের জবাবে বিজেপি একটি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে, অমিত শাহের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শাহ বলেন, "আমার বক্তব্য সংসদের রেকর্ডে রয়েছে। সেখানে সত্য এবং তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস আমার বক্তব্যের একটি অংশ বিকৃত করেছে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।"
শাহ আরও বলেন, "আমাদের দল এমন একটি সংস্কৃতি থেকে এসেছে, যেখানে আম্বেদকর বা তাঁর ভাবনাকে অবমাননা করার প্রশ্নই ওঠে না। কংগ্রেসই বরাবর আম্বেদকরকে উপেক্ষা করেছে।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, "কংগ্রেস এবং তাদের দলীয় ব্যবস্থার অপকৌশল বারবার প্রমাণিত হয়েছে। ড. আম্বেদকরের অবদানকে মুছে ফেলার জন্য তারা সব রকম চক্রান্ত করেছে।"
কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "যদি শাহ পদত্যাগ না করেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁকে বরখাস্ত করতে হবে। অন্যথায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ হবে।"
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, "ড. আম্বেদকর নিজেই একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন যে, তাঁকে পরাজিত করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন দাঙ্গে এবং সাভারকার। বিজেপি ইতিহাস বিকৃত করছে।"
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে এই বিতর্ক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আম্বেদকর, যিনি সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি দলিত সমাজের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
অন্যদিকে, শাহ বলেন, "আমরা সংবিধানের মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখেছি। কংগ্রেস বরাবরই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।"
এই বিতর্ক রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে, বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।
নাহিদা