ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ইন্দোরে ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দেওয়া নিষিদ্ধ করা হলো। ইন্দোরের জেলা কালেক্টর আশীষ সিং জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ইন্দোরে ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দেওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দেওয়া নিষিদ্ধ করে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সন্হিতা (BNSS)-এর ১৬৩ ধারায় নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ১,০০০ রুপি জরিমানার বিধান রয়েছে।
জেলা কালেক্টর আশীষ সিং জানিয়েছেন, ভিক্ষাবিরোধী অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। তখন ভিক্ষুক এবং তাদের পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ভিক্ষা না করার জন্য। তিনি জানান, “সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০০-র বেশি ভিক্ষুককে আটক করে উজ্জয়িনের আশ্রমে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তারা ভিক্ষা না করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। ১ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে যাঁরা রাস্তায় বয়স্ক ও শিশুদের ভিক্ষা দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে।”
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, BNSS-এর ১৬৩ ধারা অনুযায়ী, ভিক্ষা চাওয়া এবং ভিক্ষা দেওয়া উভয়ই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি প্রাক্তন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারার মতো এবং জেলা প্রশাসনকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা দেয়।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০২১ সালে ভিক্ষা নিষিদ্ধ করতে অস্বীকার করেছিল, জানিয়ে যে এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা এবং শিক্ষার অভাব ও কর্মসংস্থানের সংকটের কারণে মানুষকে ভিক্ষা করতে হয়।
জেলা কালেক্টর জানান, “আমরা ইতোমধ্যেই ভিক্ষা দেওয়া এবং রাস্তার শিশুদের থেকে কোনো জিনিস কেনা নিষিদ্ধ করেছি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ইন্দোরকে ভিক্ষুকমুক্ত শহর করার জন্য অভিযান চালানো হবে।”
আইএএস কর্মকর্তা দাবি করেন, গত কয়েক মাসে আটককৃত অনেক ভিক্ষুক প্রকৃতপক্ষে দারিদ্র্যের শিকার ছিলেন না। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই জমি, প্লট এবং ১ লাখের বেশি ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে।
প্রকল্প কর্মকর্তা দীনেশ মিশ্র জানান, “৩০০-এর বেশি ভিক্ষুককে উজ্জয়িনের সেবাধাম আশ্রমে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাঁরা ভিক্ষা না করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। কিছু লোক আশ্রমেই থাকছেন, আবার কেউ কেউ পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয়েছেন।”
মিশ্র আরও জানান, কিছু ভিক্ষুককে মাদকাসক্তি নিরাময় শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
ইন্দোর দেশের ১০টি শহরের মধ্যে একটি, যেগুলোকে কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের "ভিক্ষাবৃত্তি মুক্ত ভারত" পাইলট প্রকল্পের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে SMILE (Support for Marginalized Individuals for Livelihood and Enterprise) নামে একটি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে, যা ভিক্ষাবৃত্তিতে যুক্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করে।
ডিসেম্বর ৪ তারিখে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, SMILE প্রকল্পের অধীনে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ এবং পুনর্বাসনের জন্য ৮১টি ধর্মীয়, ঐতিহাসিক এবং পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ শহরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
নাহিদা