খামেনি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইরানকে নিয়ে নতুন এক ছক কষেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার হামলার টার্গেট ইরানের পরমাণু স্থাপনা। নাম প্রকাশ না করেই প্রভাবশালী ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এই কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তি সই করে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সংরক্ষণ প্রকল্প থেকে সরে আসার কথা ছিল তেহরানের।
পরিবর্তে খামেনি প্রশাসনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ওয়াশিংটন। যদিও ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইরানবিদ্বেষী আচরণ শুরু করে ট্রাম্প। এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে বের করে আনেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে ইরানের ওপর আরোপ করা হয় নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইরানের ওপর জোরদার চাপ প্রয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন ট্রাম্পের মিত্ররা। এর আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে পশ্চিম দেশগুলো। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন ট্রাম্প। তিনি আশ্বস্ত করেছেন এরপর থেকে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না তারা। যদিও দিনের পর দিন ইরান যেভাবে শক্তিধর হয়ে উঠছে তাতে লাল বাতি দেখছে আমেরিকাও। এরই মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে রেখেছে দেশটি। ইসরাইলের দাবি, পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইরান। এতে ইরান সফল হলে তা হবে ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
তাই বন্ধুকে বাঁচাতে মরিয়া ট্রাম্প সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতিই বেছে নিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা বা কূটনীতি নয় বরং ইরানে আগেভাগে বিমান হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্রের খবর, এবার ইসরাইলকে দিয়ে ইরানের ওপর হামলা চালাবেন ট্রাম্প। প্রধান টার্গেট নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্র। এরপর ফারডো, ইস্তাহানের পরমাণু কেন্দ্র। পরিস্থিতি বেগতিক হলে ইসরাইলের সঙ্গে যৌথ হামলা চালাবে আমেরিকাও। এভাবেই ইরানের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের। ট্রাম্প টিমের কিছু সদস্য ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলার অপশনকে আগের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। বিশেষ করে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর।
লেবাবন ও ফিলিস্তিনেও ইরানি প্রক্সিরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলে ইরান অনেকটাই একা হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও হামলার এমন ভাবনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তার দ্বিতীয় মেয়াদে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে কিনা।
এর জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, যে কোনো কিছু ঘটতে পারে। এখন অত্যন্ত অস্থির পরিস্থিতি। এর আগেও ইরানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা-ইসরাইলের গলার কাঁটা ইরান। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ধুঁকতে থাকা ইরানকে নিয়ে স্বস্তিতে নেই ওয়াশিংটন ও তেলআবিব।
হুমায়ুন কবির