ছবি: সংগৃহীত।
ইরান দেশের বিতর্কিত হিজাব আইন স্থগিত করেছে, যা শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আইনটিকে ‘অস্পষ্ট এবং সংস্কারের প্রয়োজন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা আইনের পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দেয়। এ খবর বিবিসির।
নতুন প্রস্তাবিত আইনে মেয়েদের চুল, হাতের বাহু এবং পায়ের নিচের অংশ প্রকাশ্যে দেখানোর জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। ইরানের মানবাধিকার কর্মীরা এই আইনটির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
ইরানে নারীদের জন্য কঠোর পোশাক আইনটি বহু দশক ধরে জাতীয় নিরাপত্তার একটি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, যা বেশ কিছু বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই আইনে অপরাধ পুনরাবৃত্তি হলে বা কেউ যদি নিয়ম লঙ্ঘন করে, তাহলে বড় জরিমানা এবং পনেরো বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই আইন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ইরানের কর্তৃপক্ষ ‘দমন-পীড়নের প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে’।
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়, তখনকার প্রার্থী পেজেশকিয়ান প্রকাশ্যে হিজাব ইস্যুতে ইরানের নারীদের প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কারও ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়। অনেক ইরানি নাগরিক বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে হতাশ হয়ে পড়েছে।
গত দুই বছর ধরে অনেক ইরানি তরুণী প্রকাশ্যে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। গত সপ্তাহেও তিনশো ইরানি অধিকারকর্মী, লেখক এবং সাংবাদিক নতুন হিজাব আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন। তারা এই আইনকে ‘অবৈধ এবং অপ্রয়োগযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থি অংশের চাপ সত্ত্বেও ইরানের তরুণ প্রজন্ম সরকারের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ভীতিহীনভাবে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে। আইনটি কার্যকর না করার এই সিদ্ধান্ত, সরকারকে নতুন করে বিক্ষোভের আশঙ্কায় ফেলেছে, যা দুই বছর আগের মতো একটি বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে তাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
নুসরাত