ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২ পৌষ ১৪৩১

সাদ্দাম হোসেনকে ধরতে যেভাবে অভিযান চালিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৩:১১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সাদ্দাম হোসেনকে ধরতে যেভাবে অভিযান চালিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত।

সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দামকে কিভাবে আটক করে হত্যা করা হয়েছিল তা কি মনে আছে? শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের তাবেদারি করতে না চাওয়ার কারণে একটি সমৃদ্ধ দেশকে ধ্বংস করা হয়েছিল, তার জ্বালানি সম্পদ প্রকাশ্যে লুট করা হয়েছিল।

২০০৩ সালের ১৮-১৯ মার্চ ইরাকে শুরু হয় মার্কিন আগ্রাসন। ২৯১৬৬ টি বোমা ও রকেট ইরাকে ফেলেছিল মার্কিন জোট। তারপর ২০০৩ সালের ১৩ই ডিসেম্বর সাদ্দামকে ধরতে অভিযান চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী। তাকে আটক করার মিশনের নাম দেয় "অপারেশন রেড ডন"।

ইরাকে হামলা শুরু হওয়ার পরপরই অজ্ঞাতবাসে চলে যায় সাদ্দাম।  তিনি হন মার্কিনীদের হাই ভ্যালু টার্গেট নাম্বার ওয়ান। ২০০৩ এর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মার্কিন টিম তাকে খুঁজতে গিয়ে ১২ বার ব্যর্থ হয়। 

এজন্য তারা ৬০০ টি অপারেশন চালিয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সংখ্যায় ছিল ৩০০। এভাবে মার্কিন বাহিনী পেয়ে যায় প্রেসিডেন্ট সাদ্দামের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য মোঃ ইব্রাহিম ওমরকে। 

ভয় দেখানো ও দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দামের ঠিকানা বলতে বাধ্য হন ওমর। 

এরপর সি স্কোয়াড্রন ডেল্টা ফোর্স, ১২১ টেক্সফোর্সের আন্ডারে থাকা আই এসএ অপারেটরস এন্ড ফোরথ আইডির ফার্স্ট বিগ্রেড কমরেড টিম শুরু করে অপারেশন রেড ডন।

সাদ্দাম হোসেনের সম্ভাব্য ঠিকানা সম্পর্কে জানতে পেরেছিল মার্কিনীরা। স্পেশাল অপারেশন ফোরসের মোট ৬০০ সদস্য কে পাঠানো হয় মাত্র একজনকে ধরে আনতে। কিন্তু এবারও সাদ্দামের খোঁজ পাচ্ছিল না তারা। 

একটি ধ্বংসপ্রায় বাড়িতে শেষ অভিযান করার সময় কর্নেল হিকি দেখতে পায় একটি কার্পেট।  কার্পেটটি সরাতে একটি গর্ত খুঁজে পায়। যার মুখটি মাটি দিয়ে আটকানো ছিল।  গর্তের ভেতর গ্রেনেড ফেলার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি।  তখনই দেখতে পায় গর্তের ভেতর থেকে দুটি হাত বাইরে বের হয়ে আসছে। 

গর্তের ভেতর দেখা যায় ছোট্ট একটি ঘর যেখানে একটি লাইট ও ফ্যান ছিল। আর ছিল বাতাস আসার জন্য একটি পাইপ। 

গর্ত থেকে বের হয়ে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন তিনি নেগোসিয়েট করতে চান। রাইফেল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। তার কাছে থাকা পিস্তলটিও কেড়ে নেয়া হয়।  তখন তিনি কোন প্রতিরোধ করেননি।  তার সাথে ছিল একটি একে-৪৭ রাইফেল ও সাড়ে সাত লাখ ডলার। 

তাকে একটি হেলিকপ্টারে করে বাগদাদে নেওয়া হয়।  এরপর আমেরিকার পুতুল ইরাকি সরকার সাদ্দাম হোসেনের বিচার করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। 

পৃথিবী জুড়ে ডলারের অন্যায় আধিপত্য ঠেকাতে সাদ্দাম হোসেন চেয়েছিলেন ইউরোতে তেল বিক্রি করতে। সেটার প্রতিশোধ নিতে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ছুতোয় ঈদের দিন সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

নুসরাত

×