সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাঁর শাসন ক্ষমতা হারানোর পর প্রথমবারের মতো বিবৃতি দিয়েছেন। আসাদ সিরিয়ার প্রেসিডেন্সির টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে দাবি করেন, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, “দামেস্ক শহর পতনের পরদিন ৮ ডিসেম্বর রাশিয়ার ঘাঁটিতে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি কখনও পদত্যাগ বা শরণার্থী হওয়ার কথা ভাবিনি। একমাত্র পরিকল্পনা ছিল সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করা।”
আসাদ জানান, বিদ্রোহীরা দামেস্কে ঢুকে পড়ার আগ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পর রাশিয়ার বাহিনীর সহযোগিতায় তাঁকে লাতাকিয়ার রুশ ঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, “আমি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কখনও ক্ষমতায় ছিলাম না। আমি নিজেকে একটি জাতীয় প্রকল্পের অভিভাবক হিসেবে বিবেচনা করি, যা সিরিয়ার জনগণের বিশ্বাস দ্বারা সমর্থিত।”
তবে তিনি ভবিষ্যতে সিরিয়ায় ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে কিছু উল্লেখ করেননি।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে ৩ লাখের বেশি সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রথম দশকে আরও ২.৫ লাখ যোদ্ধার প্রাণ গেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ার সরকার ও তাদের মিত্র বাহিনী প্রায় ৮৭% প্রাণহানির জন্য দায়ী। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার ছিল শিশু।
আসাদের সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সেডনায়া কারাগারকে "মানব হত্যাযন্ত্র" নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যেখানে নির্বিচারে ফাঁসি ও হত্যা চালানো হতো।
আসাদের শাসনের পতনের মাধ্যমে সিরিয়ায় ৫০ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে। তবে দেশটির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি অনিশ্চিত। যুদ্ধ এবং ধ্বংসযজ্ঞের চূড়ান্ত প্রভাব মূল্যায়ন চলছে।
সূত্র: স্কাই নিউজ
নাহিদা