ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সামরিক আইন জারি করে বিতর্কিত হন ইউন সুক ইউল

প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করল দ. কোরিয়ার পার্লামেন্ট

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করল দ. কোরিয়ার পার্লামেন্ট

ইউন সুক ইউল

হুট করে সামরিক আইন জারি করে বিপাকে পড়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অবশেষে অভিশংসনের শিকার হলেন। শনিবার বিরোধীদলের নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্টে আনা দ্বিতীয় দফা অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে মোট ৩শ সংসদ সদস্যের মধ্যে ২০৪ জন অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ইউনের নিজের দলের অন্তত ১২ জন এমপিও তাকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন।

এরপরই ইউন সুক ইওলকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অভিশংসনের পরই ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন ইউন সুক ইওল। শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের। 
অভিশংসন ভোটের আগেই হাজার হাজার মানুষ দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হন। ভোটের ফল জানার পর তারা উল্লাস করেন। এ মাসের শুরুর দিকে হঠাৎ করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন। এরপরই বিতর্কের শুরু। কিন্তু পার্লামেন্ট সেই আদেশের বিরুদ্ধে ভোট দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি মার্শাল ল’ তুলে নিতে বাধ্য হন। কিন্তু এরপর থেকেই প্রেসিডেন্ট ইউনের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে থাকে। গত সপ্তাহেও তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অভিশংসনের একদফা ভোটাভুটি হয়েছিল।

সেই সময় সরকারি দলের এমপিরা ভোটের আগে পার্লামেন্ট ত্যাগ করায় তিনি টিকে যান। তবে দ্বিতীয় দফায় অভিশংসিত হওয়ার কারণে নোটিস পাওয়ার পর থেকে সাময়িকভাবে তার সব ক্ষমতা স্থগিত থাকবে। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সো। প্রেসিডেন্ট ইউন এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি সাময়িকভাবে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখছেন।

ইউন সুক ইওল বলেন,  সাময়িকভাবে আমার যাত্রা বন্ধ রাখছি। তবে গত আড়াই বছর ধরে যে পথে আমি হেঁটে আসছি, সেই যাত্রা থামবে না। ইউনের দল পিপলস পাওয়ার পার্টির প্রধান হান ডং-হোন বলেছেন, তিনি ভোটের ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং এটাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার আগে তিনি প্রেসিডেন্টকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন যেন তিনি ভোটের আগেই পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছেন, তার দল ভুল সংশোধনের পক্ষে এবং সংবিধান ও গণতন্ত্রের সুরক্ষায় কাজ করে যাবে। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইউন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে পুরোপুরি ক্ষমতাচ্যুত করা হবে কি না, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সে দেশের সাংবিধানিক আদালত।

পার্লামেন্টে অভিশংসনের ছয় মাসের মধ্যে এই বিষয়ে ওই আদালতের রায় জানাতে হবে যে প্রেসিডেন্ট ইউন প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকবেন নাকি বরখাস্ত হবেন। সাংবিধানিক আদালত যদি অভিশংসনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে, তাহলে সেই রায় দেওয়ার পর থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। দেশটির সংবাদ মাধ্যম বলছে, প্রেসিডেন্ট ইউনের বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার সাংবিধানিক আদালতের বসার কথা রয়েছে।

×