সম্প্রতি ন্যালসন আর্মেনিয়া নামে একজন কেনিয়ার নাগরিক এক ভিডিও বার্তায় আদানির সাথে কেনিয়ার গোপন চুক্তি ফাঁস করেছে।
ন্যালসন আর্মেনিয়া বলেন, আমি কেনিয়ার অর্থনীতি ক্ষতি করার মত সন্দেহজনক একটি চুক্তি জনসম্মুখে নিয়ে এসেছি। সেই চুক্তির ৯০% সুবিধা আদানির ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানকে লাভবান করছে আর মাত্র ১০% লাভ আমাদের।
বর্তমানে ন্যালসন কেনিয়ায় একজন নায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। কারণ তিনি কেনিয়ার সরকার এবং আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংস এর মধ্যে ২০০ কোটি ডলারের একটি বিতর্কিত চুক্তি ফাঁস করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী নাইরুবিতে কেনিয়ার প্রধান বিমানবন্দরটি আদানির কোম্পানির কাছে ৩০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া এবং দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে এটিকে আধুনিক করার কথা ছিল।
ন্যালসন বলেন,তারা ক্রয় প্রক্রিয়ার সঠিক নিয়ম অনুসরণ করেনি। সাধারণত জনগণের অংশগ্রহণ থাকার কথা কিন্তু তারা সেটা করেনি ।আমি ফাঁস করার পর তারা তাড়াহুড়ো করে একটি ভুয়া জনসম্পৃক্ততার কাজ করেছিল। তারা কেনিয়া বিমানবন্দর কতৃপক্ষের লোকজনকে ডেকেছিল এবং স্টেক হোল্ডার মিটিং শুরু করেছিল যা তারা আগে করেনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন ,কেনিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে আদানি গ্রুপের সাথে গোপনে চুক্তিটি পাস করার চেষ্টা করছেন এবং সেই অনুমোদনের কোন বৈধ কারণও দেখেননি। কিভাবে বিমানবন্দরটি আপগ্রেড করা হবে সেটা নিয়ে কেনিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এডভাইজারের মতামত সম্পূর্ণ উল্টো ছিল কিন্তু আদানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল । তাহলে প্রশ্ন আসে তারা কেন একটি পরামর্শ প্রতিষ্ঠান থেকে পরামর্শ নেওয়া হল যদি তারা মানতে না চায়। ন্যালসনের ফাঁস করার তথ্য কেনিয়াজুড়ে ক্ষোভোর সৃষ্টি করে। বিমানবন্দরের কর্মীরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দাবি করেন।
আদানি গ্রুপ নেলসনের অভিযোগগুলোকে বৃত্তিহীন ও বিদ্বেষপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে। আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্র বলেন , এ প্রস্তাব কেনিয়ার পাবলিক প্রাইভেট প্রস্তাব অনুযায়ী জমা দেওয়া হয়েছিল এর উদ্দেশ্য ছিল একটি বিশ্বমানের বিমানবন্দর তৈরি করা এবং অসংখ্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করে কেনিয়ার অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্য হারে উন্নত করা করা। আরো বলা হয়, সেসব আলোচনা কোন চুক্তি পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
কেনিয়াও ঘোষ ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং আদানি গ্রুপের সাথে ৭৩ কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলারের আরেকটি বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তি সই করে পিছু হটতে বাধ্য হয় যখন যুক্তরাষ্ট্র আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে।
ল্যানসন বলেন, এটা একটা ভালো লাগার বিষয় যে এগুলো সঠিক প্রমাণিত হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট চুক্তিটি বাতিল করেছেন এ থেকে বুঝা যায় এটি একটি বাজে চুক্তি ছিল। যদি তারা তাদের অবস্থান ধরে রাখত তাহলে বুঝা যেত এটি একটি ভালো যুক্তি ছিল।
আদানি গ্রুপ জানিয়েছে, তাদের বিদ্যুৎ প্রক প্রকল্পের প্রস্তাব কেনিয়ার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি আইনের অধীনে জমা দেওয়া হয়েছিল এবং এটি কেনিয়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিচালনাকারী সংস্থা ও পিপিপির অধিদপ্তর উভয়ই মূল্যায়ন করে অনুমোদন দিয়েছে। তারা জানিয়েছে আদানি কম্পানি তাদের কার্যক্রম বা প্রস্তাবগুলোতে কেনিয়ার আইন লঙ্ঘনের সমস্ত অভিযোগ এবং ইঙ্গিত সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করছে তারা প্রতিটি প্রকল্পে সম্মতি স্বচ্ছতা এবং সংশ্লিষ্ট দেশের আইন অনুযায়ী কাজ করে। সূত্র:বিবিসি
সাইদুর