ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বাশার সরকারের পতনের পর সিরিয়া ছাড়লো লক্ষাধিক মানুষ

প্রকাশিত: ২১:৪২, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাশার সরকারের পতনের পর সিরিয়া ছাড়লো লক্ষাধিক মানুষ

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশজুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। শিয়া, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা তাদের নিরাপত্তার অভাবে জন্মস্থান ত্যাগ করছেন। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে দশ হাজারেরও বেশি সিরিয়ান প্রতিবেশী দেশ লেবাননের দিকে পাড়ি জমাচ্ছেন।

লেবানন সীমান্তে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষত শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক চরমে। তারা জানিয়েছেন, আসাদ সরকারের পতনের পর সুন্নি বিদ্রোহীদের হাতে তারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এক শরণার্থী জানান, "আমাদের বাড়িঘর লুট করা হয়েছে, পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমনকি খাবার এবং পানির অভাবে দিন কাটাতে হয়েছে। লেবানন ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।"

সিরিয়ার সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের কর্মকাণ্ডে ভরসা করতে পারছেন না এই সম্প্রদায়ের মানুষ। বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস (হায়াত তাহরির আল-শাম) বৈশ্বিক সন্ত্রাসী তালিকায় থাকা এবং আইএস-এর সাথে তাদের পূর্ব সম্পৃক্ততার কারণে শঙ্কা আরও বেড়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এক যুগের গৃহযুদ্ধ এবং সুন্নি-শিয়া দ্বন্দ্ব সিরিয়ার সাম্প্রদায়িক ভারসাম্য ভেঙে দিয়েছে। দেশটির ২.৫ কোটি জনসংখ্যার ১০ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। বাশার আল আসাদ সরকার সংখ্যালঘুদের ওপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু তার পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।

লেবাননে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। তারা বলছে, "আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কেউ নেই। আমরা শুধু বাঁচার চেষ্টা করছি।"

সিরিয়ার এই মানবিক সংকট সমাধানে বৈশ্বিক নেতৃত্ব এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখনো লাখ লাখ মানুষ তাদের নিরাপত্তা এবং মানবিক অধিকার নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।

রাজু

×