ছবি: সংগৃহীত।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে বাশার আল আসাদ দেশ ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি, তবে বিদ্রোহী বাহিনীর অগ্রগতির মুখে শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যান।
বাশার আল আসাদ, যে নিজেকে সিরিয়ার ভবিষ্যতের অটুট নেতা হিসেবে দেখেছিলেন, তিনি দেশ ছাড়ার আগে জাতির উদ্দেশ্যে একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একটি বৈঠকও ডাকেন, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি। এর পরেই, পরিবারের সদস্যদের কিছু জানিয়ে না রেখেই, প্রাণের ভয়ে বিমানে চেপে দামেস্ক ত্যাগ করেন।
এইচটিএস (হায়াত তাহরির আল-শাম) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে সিরিয়ায় দুই যুগের আসাদ শাসনের অবসান ঘটে। দ্রুতই ক্ষমতা থেকে পালিয়ে যান এই স্বৈরশাসক।
কীভাবে ঘটেছিল ক্ষমতাচ্যুতির সেই মুহূর্ত? শেষ সময়ে কীভাবে তিনি গদি ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর এখন সামনে এসেছে।
বিদ্রোহীরা যখন অবিশ্বাস্য গতিতে দামেস্কের দিকে এগিয়ে আসছিল, তখনো বাশার আল আসাদ চেষ্টা করছিলেন তার ক্ষমতা ধরে রাখতে। তিনি দ্রুত তার অনুগত সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা প্রধানদের সাথে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন, যাতে তারা রুশ সহায়তার আসন্ন আগমনের বার্তা দিয়ে, বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে পারে।
কিন্তু বিদ্রোহীদের অগ্রগতির মুখে বাশার আশাহত হন এবং শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টশিয়াল কার্যালয় ছেড়ে বাসায় যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে যান। এরপর তিনি মিডিয়া কর্মীদেরকে বাসায় ডেকে বক্তৃতা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। রাজধানী তখন বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছিল।
বাশার আল আসাদ তখন জীবন বাঁচাতে সরাসরি বিমানবন্দরে চলে যান। সেখান থেকে তিনি একটি বিমানে পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় শহর লাতাকিয়ায় উড়াল দেন। সেখানে তিনি মিত্র দেশ রাশিয়ার সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন।
এ সময় বিমানের ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রাখা হয়েছিল, যাতে কেউ তার অবস্থান ট্র্যাক করতে না পারে। রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর, সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন তার স্ত্রী আসমা ও তিন সন্তান।
এখন পর্যন্ত জনসম্মুখে আসাদকে দেখা যায়নি, এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন রয়ে গেছে।
নুসরাত