দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল গত সপ্তাহে সামরিক আইন ঘোষণার চমকপ্রদ সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে দাবি করে বলেছেন, এটি দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন আকস্মিক এক ভাষণে তিনি জানান, এটি একটি বৈধ পদক্ষেপ ছিল যা ‘গণতন্ত্রের পতন ঠেকানো’ এবং বিরোধী দলের ‘সংসদীয় একনায়কত্ব’ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল।
বাড়তে থাকা পদত্যাগ বা অভিশংসনের দাবির মধ্যেও ইউন বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। ‘আমি অভিশংসিত বা তদন্তের মুখোমুখি হলেও দৃঢ় থাকব," তিনি বলেন। "আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’
ইউন এবং তার মিত্ররা বর্তমানে অভ্যুত্থানের অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে কয়েকজনের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
তবে ইউন দাবি করেছেন যে, তার সামরিক আইন জারি ছিল না কোনো অভ্যুত্থানমূলক পদক্ষেপ; বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এখন তার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া উস্কানি’ ছড়াচ্ছে।
শনিবার ক্ষমা চাওয়ার পর বৃহস্পতিবারের ভাষণে তিনি একই যুক্তি পুনর্ব্যক্ত করেন, যা তিনি সামরিক আইন ঘোষণার রাতে দিয়েছিলেন। তিনি বিরোধীদের "বিপজ্জনক" বলে উল্লেখ করেন এবং দাবি করেন যে, তিনি জনগণ ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তবে তিনি স্বীকার করেন, তিনি তার ‘আইনি ও রাজনৈতিক দায়িত্ব’ এড়িয়ে যাবেন না।
গত সপ্তাহান্তে বিরোধী আইনপ্রণেতারা ইউনকে অভিশংসনের চেষ্টা করেছিলেন, যা ব্যর্থ হয়, কারণ তার নিজ দল ভোট বয়কট করেছিল। তবে বিরোধী দল ঘোষণা করেছে, তারা প্রতিটি শনিবার অভিশংসন ভোট আনবে যতক্ষণ না ইউন পদত্যাগ করেন।
ইউনের দল প্রথমে চেয়েছিল, প্রেসিডেন্ট স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করুন। কিন্তু ইউন পরিষ্কার করেছেন, তিনি সরে দাঁড়াবেন না।
ইউনের দলীয় নেতা হান ডং হুন, তার ভাষণের আগে টেলিভিশনে বলেন, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের সম্ভাবনা নেই। এরপর তিনি দলীয় সদস্যদের আহ্বান জানান, ইউনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভোট দিতে।
যদি দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে অভিশংসন বিল পাস হয়, একটি সাংবিধানিক আদালতে বিচার অনুষ্ঠিত হবে। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ইউন স্থায়ীভাবে ক্ষমতাচ্যুত হবেন।
এপ্রিলের সাধারণ নির্বাচনে বিরোধীরা বিপুল জয় পাওয়ার পর থেকে ইউন কার্যত অকার্যকর প্রেসিডেন্ট। তার সরকার কোনো আইন পাস করতে পারছে না এবং কেবল বিরোধীদের প্রস্তাবিত বিলগুলোতে ভেটো দিচ্ছে।
নাহিদা