মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবারো বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।‘কিছু ভুয়া ভিডিও’ সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ছড়ানোর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভারতীয়দের একাংশের প্রচারণার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সবাইকে সতর্ক করার মধ্যেই মমতা বলেছেন, “কিছু ‘ফেক ভিডিও’ চলছে। ভারত সরকার প্রতিনিধি পাঠিয়েছে, এটা ভারত সরকারের দেখার কথা; এটা আমার দেখার কথা নয়।”
বুধবার পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন মমতা। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ খোলেন মমতা; একহাত নেন পশ্চিমবঙ্গের কিছু গণমাধ্যমকেও।
তবে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে এবার আরও দায়িত্বশীল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরে শ্রদ্ধা রেখে কথা বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী মমতা।
ভিসার বিষয়ে মমতা বলেন, “আমি শুনেছি বাংলাদেশে ভিসা আরো বাড়ানো হয়েছে, যাতে ওপার বাংলার মানুষ বেশি করে এপারে আসতে পারে। আমাদের লোকেদেরও ফিরিয়ে আনা হোক, যারা আসতে চায়।”
“এটা আমি আগেও বলেছি। এটা গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়ার বিষয়, গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের বিষয় নয়।”
বাংলাদেশ ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সংবাদিকরা বারবার প্রশ্ন করায় উষ্মা প্রকাশ করে মমতা বলেন, “বারবার এই বিষয়ে আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না। গোটা বিষয়টাকে মিসলিড করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
“আপনারা নিশ্চয়ই প্রশংসা করবেন এখানকার ইমাম অ্যাসোসিয়েশন বড় বড় ইমামরা একযোগে ঘোষণা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে, আমরা তার নিন্দা করি। আমরা তাদের নিরাপত্তার দাবি করছি।”
মমতা বলেন, “আমরাও রাজ্য সরকারের তরফে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি করছি। আমরা বলছিম গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া মাস্ট অ্যাক্ট। অ্যাক্ট মনে মানুষকে নিরাপত্তা দিক, যারা ফিরতে চায় তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক।”
সীমান্ত পরিস্থিতির বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্ডার থেকে অনেকেই চলে আসছে, আমি শুনছি। কিন্তু বিএসএফ কোথাও আটকাচ্ছে, কোথাও আটকাচ্ছে না। সিভিল এভিয়েশনের থ্রু যারা আসছে, প্লেন তো চালু আছে; ট্রেন তো চালু আছে (মৈত্রী বন্ধন কিংবা মিতালী তিনটি ট্রেনে পাঁচই আগস্টের পর থেকে বন্ধ আছে) তারা তো আসছে। পাসপোর্ট ভিসা যাদের আছে, তারা তো আসছে। বন্ধ তো করা হয়নি।”
উভয় দেশের সংখ্যাগুরুদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, “আমরা শুধু চাই, তারা (বাংলাদেশ) আমাদের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করুক। সব জায়গার সংখ্যাগুরুদের দায়িত্ব সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা।”
সীমান্ত বন্ধ করা, না-করার বিষয়ে যে আলোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে মমতা জোর গলায় বলেন, “ইন্দো-বাংলাদেশ তো একটাও সীমান্ত বন্ধ করা হয়নি। বন্ধ করলে তো নির্দেশিকা আমাদের কাছেও থাকত। আমাদের কাছে এমন কোনো নির্দেশিকা নেই। গোটাটাই গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়ার বিষয়।”
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বিষয়ে ‘ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি’। বাংলাদেশি ও ভারতীয় ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ভুয়া ভিডিও প্রকাশ করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
সবশেষ, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার উত্তরা এলাকার এক ঘটনা নিয়ে মিথ্যা খবর প্রকাশ হয়েছে ভারতীয় কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে। তাতে বলা হয়েছে, ইসকনের একজন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে। এবিপি আনন্দ ও সংবাদ প্রতিদিনসহ ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
রিয়াদ