বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন
সংঘাত থামতে না থামতেই আবারও বাজছে যুদ্ধের দামামা। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েকদিনের মাথায় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ। সোমবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইল বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত দুজন নিহত হন। পরে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে সতর্কীকরণ গুলি ছোড়ে হিজবুল্লাহ। এরপর লেবাননের একাধিক জায়গায় বিমান হামলা চালায় নেতানিয়াহু বাহিনী। এ সময় আরও ৯ লেবানিজ নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখ-ে ইসরাইলি বর্বর হামলায় একদিনে আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছেছে। খবর আলজাজিরার।
এদিকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন শপথ নেওয়ার আগেই গাজায় হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি চান তিনি। তিনি হামাসকে তার শপথ গ্রহণের আগের দিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসকে ভয়াবহ পরিণতির ভোগ করতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে অক্সফোর্ড ইউনিয়ন বিতর্কের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে। ১৮২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠন ইসরাইলির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির পর এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে তা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
গেল বুধবার যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও লেবাননে বেশ কয়েকবার হামলা চালায় ইসরাইল। এতে হতাহত হন অনেকেই। এই হামলা চুক্তির লঙ্ঘন দাবি করে মঙ্গলবার সতর্কীকরণ গুলি চালায় হিজবুল্লাহ। আর এ ঘটনাই আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে। হিজবুল্লাহর গুলির পাল্টা জবাব দিতে লেবাননে লাগাতার হামলা চালায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বুরগাজ এলাকায় ও ইয়ারুন শহরের উপকণ্ঠে যুদ্ধবিমান থেকে লাগাতার বোমাবর্ষণ করেছে ইসরাইল। পূর্বাঞ্চলের বেকা উপত্যকাতেও চালানো হয় বিমান হামলা। এতে কয়েকজন নিহত হন। ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলছে, কঠোর জবাব দিতে তারা হিজবুল্লাহর বিভিন্ন অবোকাঠামোতে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, হিজবুল্লাহর এই সতর্কীকরণ গুলির পাল্টা জবাব কঠোরভাবে দেয়া হবে। গাজা উপত্যকার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখ-ে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে।