ভলোদিমির জেলেনস্কি
যুদ্ধের ময়দানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একের পর এক হামলার তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে সুর পাল্টালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্কাই নিউজে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, রাশিয়ার দখল করা এলাকাগুলো পুনর্দখল না করে করেই যুদ্ধ বিরতিতে আসবে ইউক্রেন। তবে শর্ত, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ দেয়ার চিন্তা করতে হবে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের সঙ্গে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শর্ত জুড়ে দিলেও প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বললেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
ওই সাক্ষাৎকারে প্রতিবেদক স্টুয়ার্ট রামস ভলোদিমির জেলেনস্কিকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি ন্যাটোর সদস্যপদ গ্রহণ করবেন কি না, কেবলমাত্র কিয়েভ যে অঞ্চলগুলো দখল করেছে সে অঞ্চলগুলোসহ।
জবাবে জেলেনস্কি বলেন, হ্যা হব। তবে শুধু তখনই রাজি হব যখন পুরো ইউক্রেনকে অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্তের মধ্যে ন্যাটো সদস্যপদের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছে, সেগুলোকে আমরা রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারি না। এটা অসম্ভব এবং ইউক্রেনের সংবিধানবিরোধী।
এরপর ইউক্রেন ‘কূটনৈতিক উপায়ে’ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল ফেরত নেওয়া নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করতে পারে বলেও তিনি জানান।
কেউ এখনও এই ধরনের প্রস্তাব দেয়নি বলেও জানান জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন কখনোই এ ধরনের প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখার সুযোগ পায়নি, কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ আমাদের প্রস্তাব দেয়নি। বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাসহ পুরো দেশকে ন্যাটোর সদস্যপদ দিতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আপনি একটি দেশের শুধুমাত্র একটি অংশকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন না। কারণ এভাবেই আপনি বুঝতে পারবেন ইউক্রেনের সকল এলাকা শুধুমাত্র ইউক্রেনের ভূখণ্ড আর অন্যটি রাশিয়া। ’
উল্লেখ্য, গত তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— ইউক্রেনের এই চার প্রদেশের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়েছে মস্কো।
দখলের পর মস্কোর পক্ষ থেকে কিয়েভকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, যদি ইউক্রেন আনুষ্ঠানিক ও সাংবিধানিকভাবে ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করবে রুশ বাহিনী।
এর পাল্টা জবাবে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যদি এই ৫ অঞ্চল ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দেয় এবং নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তিনি যুদ্ধবিরতির সংলাপ শুরু করতে রাজি আছেন।
স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার তার প্রস্তাব মেনে নেয়নি। ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত বিরতিও আসেনি।
তবে ইউক্রেনের মিত্ররা পর্যাপ্ত আগ্রহ দেখালে আগামী বছরে যুদ্ধ শেষ হতে পারে বলে মন্তব্য জেলেনস্কির।
শিহাব