ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

৩ লাখ কর্মী নেবে জার্মানি, সুযোগ নিতে পারেন আপনিও

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

৩ লাখ কর্মী নেবে জার্মানি, সুযোগ নিতে পারেন আপনিও

ছবি: সংগৃহীত।

প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মানুষ কাজের সুযোগের জন্য জার্মানিতে যাওয়ার আবেদন করেন। অনেক সময় অবৈধ উপায়ে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন কিছু মানুষ, যার ফলে কাজ পেতে তাদের বেশ কিছু কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে এবার অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য এক বিরাট সুখবর দিয়েছে জার্মানি।

জার্মান সরকার নতুন একটি অভিবাসন নীতির ঘোষণা করেছে, যা বিদেশি কর্মীদের জন্য আরও সহজ এবং সুসংগঠিত প্রক্রিয়া তৈরি করবে। এই নতুন নীতি অনুযায়ী, অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজতর হবে এবং বিদেশি কর্মীদের জন্য বৈধভাবে জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে, যারা জার্মানিতে কাজ করতে চান, তারা আরও কম সময়ে এবং সহজভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

কারন যথাযথ অভিবাসন ব্যবস্থা না থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানির কর্মক্ষম জনসংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ কমে যেতে পারে, এমন একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার দক্ষ বিদেশি কর্মী না আসলে জার্মানির কর্মক্ষম জনসংখ্যা ৪৬.৪ মিলিয়ন থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে ৪১.৯ মিলিয়নে কমে যাবে। আর ২০৬০ সালে এই সংখ্যা আরও কমে ৩৫.১ মিলিয়নে দাঁড়াতে পারে।

গবেষণায় বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশনের অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সুজানে শুলজ বলেন, বেবি বুমার প্রজন্মের অবসর গ্রহণের ফলে শ্রমবাজারে এক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যদিও জার্মানির অভ্যন্তরীণ দক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন, তবে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিবাসনকে একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশনের গবেষণায় বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংস্কৃতি আরও উদার এবং সমর্থনমূলক না হলে বিদেশি কর্মীরা সহজে আসবে না। তাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের সম্ভাবনা তৈরি না হলে অভিবাসন প্রক্রিয়া সফল হবে না।

সুজানে শুলজ আরও বলেন, আইনগত সংস্কার একটি ভালো পদক্ষেপ হলেও, এটি যথেষ্ট নয়। অভিবাসীদের জন্য প্রশাসনিক বাধা দূর করা, কাজের পরিবেশ উন্নত করা, এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা জরুরি।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বর্তমান অভিবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর এবং স্বচ্ছ করা আবশ্যক, যাতে বিদেশি কর্মীরা সহজে জার্মানির শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া, বিদেশিদের দক্ষতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন এবং তাদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বৈষম্য এবং কাজের পরিবেশে অসুবিধা বিদেশি কর্মীদের অন্য দেশে চলে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে মনে করেন সুজানে শুলজ। তার মতে, জার্মানির মতো উন্নত দেশের পক্ষে এই পরিস্থিতি সহ্য করা সম্ভব নয়। তিনি পরামর্শ দেন, বিদেশি কর্মীদের আকর্ষণ করার জন্য জার্মানির আরও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

এই গবেষণার ফলাফল, জার্মানির ভবিষ্যৎ শ্রমবাজারের জন্য একটি সতর্ক সংকেত। যদি এই অভিবাসন প্রক্রিয়া এবং সংস্কৃতির পরিবর্তনগুলি দ্রুত না করা হয়, তবে দেশটি ভবিষ্যতে শ্রমিক সংকটে পড়তে পারে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নেও প্রভাব ফেলবে।

নুসরাত

×