ভারতের বিখ্যাত আজমির শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে নানান বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিমদের প্রতি সরকারের কঠোর নীতির ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কেন শুধুমাত্র এই সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে মোদি সরকার।
সম্প্রতি আজমির শরিফ ইস্যুতে উত্তাল ভারতের রাজনীতি। মোদি সরকারের নেতৃত্বে বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) একদিকে ভারতের জাতীয়তাবাদী ধারণাকে প্রসারিত করছে, অন্যদিকে মুসলিমদের অধিকার সীমিত করার জন্য বেশ কিছু বিতর্কিত আইন এবং নীতি প্রবর্তন করেছে। আইনি পদক্ষেপগুলো মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ এই আইনগুলি মুসলিমদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে চিহ্নিত করতে পারে।
এছাড়া, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য, সহিংসতার ঘটনা এবং সমাজে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ উঠছে।
বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, মোদি সরকার মুসলিমদের স্থাপনাকে টার্গেট করে তাদের সামাজিক অবস্থান দুর্বল করতে চাইছে। তারা বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপগুলো ভারতের ঐক্য ও বহুত্ববাদী সংস্কৃতির জন্য বিপদজনক এবং দেশের দীর্ঘকালীন ঐতিহ্যের পরিপন্থী।
তবে, বিজেপি পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সরকার শুধুমাত্র জাতীয় নিরাপত্তা এবং দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করছে এবং এটি কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু বিরোধীরা স্পষ্টভাবে বলছেন, সরকার মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করছে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন উঠছে, ভারতীয় সমাজ কীভাবে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহিষ্ণুতার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে পারে। মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলেও, সরকার যে ভাবে তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু করছে, তা দেশের সামাজিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য বড় প্রশ্ন সৃষ্টি করছে।
উল্লেখ্য, ভারতের বিখ্যাত মাজার আজমির শরিফের নিচে মন্দির আছে দাবি করে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে দেশটির উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এই পিটিশন দায়ের করার পর আজমীরের একটি আদালত দাবিটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি, বারাণসী, মথুরা ও ধরর ভোজশালাসহ সারাদেশের বড় বড় মাজারগুলোর ক্ষেত্রেও একই দাবি তুলেছে হিন্দু সেনা।
উত্তরপ্রদেশের মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবিতে জরিপ চালানো নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে তিন জন মুসলিমসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এবার রাজস্থানের আজমিরে অবস্থিত এই বিখ্যাত দরগাতে মন্দির রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলেন স্থানীয় আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২০ ডিসেম্বর।
তাবিব