ছবি: সংগৃহীত
ভারতের রাজস্থানের বিখ্যাত মাজার আজমির শরিফ দরগাহ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। একটি শিবমন্দিরের ওপর খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহটি গড়ে তোলা হয়েছে দাবি করে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে দেশটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এই পিটিশন দায়ের করার পর বুধবার আজমিরের একটি আদালত দাবিটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি, বারাণসী, মথুরা ও ধরর ভোজশালাসহ সারা দেশের বড় বড় মাজারগুলোর ক্ষেত্রেও একই দাবি তুলেছে হিন্দু সেনা।
আবেদনকারী হিন্দু সেনা সংগঠনের প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত। আবেদনে তিনি বলেন, অযোধ্যা, কাশী ও মথুরার মতো আজমিরেও শিবমন্দিরের ওপর মুসলমানরা উপাসনালয় গড়ে তোলেন। তার দাবি, সত্যতা নির্ধারণে ওই দরগাহস্থলের সমীক্ষা করা জরুরি। সেই সঙ্গে আজমির শরিফকে সংকট মোচন মহাদেব মন্দির হিসেবে ঘোষণা করে হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়া হোক। সুফিসাধক মইনউদ্দিন চিশতির দরগাহটি আজমির শরিফ হিসেবে পরিচিত।এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, আদালতে দায়ের করা পিটিশনে ১৯১০ সালে হরবিলাস সারদা নামের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারক লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আদিতে আজমির শরিফের স্থানে একটি শিবমন্দির ছিল। সেখানে প্রতিদিন পূজা অর্চনা হতো। কয়েক দিন আগে উত্তরপ্রদেশের সামভালে মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবিতে জরিপ চালানো নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে ছয়জন নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২০ ডিসেম্বর।
পিটিশনারদের আইনজীবী যোগেশ শিরোজা বলেছেন, তাদের আবেদনের ভিত্তিতে দেওয়ানি বিচারক মনমোহন চান্দেল এ ব্যাপারে আজমির দরগাহ কমিটি, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার কাছে নোটিস পাঠিয়েছেন। তাদের সবাইকে নিজ নিজ জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এই বিচারক।
এদিকে, মাজার কমিটি এই দাবি অস্বীকার করেছে। আঞ্জুমান সৈয়দ জাদগানের সেক্রেটারি সৈয়দ সারওয়ার চিশতী বলেন, এখানে বহুতত্ববাদ প্রচার হয়। আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়াসহ সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এই মাজারে আসেন। দরগা কমিটি বলছে, এই ধরনের পিটিশন ও আদালতের এমন সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এর আগে কাশী ও মথুরার প্রাচীন মসজিদগুলোকে লক্ষ্য করেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা মোটেই ভালো হচ্ছে না।
শিহাব