আজমীর শরিফ
ভারতের রাজস্থানের আজমির শরিফ দরগাহ’য়ে শিবমন্দির ছিল বলে দাবি করছেন হিন্দুত্ববাদীরা। তাদের দাবি, ৮০০ বছরের বেশি পুরানো খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহটি গড়ে তোলা হয়েছে শিবমন্দিরের ওপর। কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে স্থানীয় আদালতে আবেদনও জানানো হয়। আবেদনে দরগাহের ভূতাত্বিক জরিপ করার অনুমোদন চাওয়া হয়। এ নিয়ে আদালত ভারতের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
উত্তর প্রদেশের সম্ভলে জামা মসজিদ নিয়ে একই দাবির প্রেক্ষিতে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই ওই নতুন দাবি উঠল। সম্ভলে সংঘাতে অন্তত পাঁচজন নিহত হন।
হিন্দু সেনা সংগঠনের প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত ভারতের সব ধর্ম, সব শ্রেণির মানুষের কাছে প্রিয় আজমির শরিফ নিয়ে বিতর্কীত এ দাবি তুলেন। তিনি বলেন, অযোধ্যা, কাশী ও মথুরার মতো আজমিরের ওই স্থানেও মুসলমানরা উপাসনালয় গড়ে তোলে শিবমন্দিরের ওপর। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই দরগাহস্থলের সমীক্ষা জরুরি। দরগায় হিন্দুদের উপাসনা করার অধিকার দেওয়ার দাবিও তোলা হয় আবেদনে।
বিষ্ণু গুপ্ত বিচারককে জানান, শিক্ষাবিদ হরবিলাস সারদা ১৯১০ সালে একটি বই লেখেন। তাতে শিবমন্দিরের অস্তিত্ব থাকার কথা জানিয়েছিলেন। সেই মন্দিরের ওপরই গড়ে তোলা হয়েছে খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহ। বিষ্ণু গুপ্তের দাবি, ওই মুসলিম উপাসনাস্থলকে মন্দির ঘোষণা করে তা হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে আজমির শরিফ দরগাহ ৮১৩তম ওরস উদযাপন করবে। দরগাহর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থার সম্পাদক সৈয়দ সারোয়ার চিশতি বলেন, মন থেকে না হলেও অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় তারা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু কাশী, মথুরা ও সম্ভলে একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য সদ্য অবসর নেওয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে দায়ী করেন সারোয়ার চিশতি। তার দাবি, বিচারপতি চন্দ্রচূড় উদ্যোগ নিলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতে পারত না।
গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের সম্ভলের জামা মসজিদে স্থানীয় আদালতের নির্দেশে সমীক্ষক দল জরিপ করতে গেলে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ বাধে। তাতে পাঁচজন নিহত হন। এখানেও মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি তোলা হয়। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা তাজমহল ও কুতুব মিনার নিয়েও এই একই দাবি জানিয়ে আসছেন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ইসরাত