মেটা কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার-আ-লাগো রিসর্টে দেখা করেছেন, যা তাদের একসময়ের ঠান্ডা সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে প্রযুক্তি দুনিয়ার আরেক শীর্ষ ব্যক্তি, এক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
তবে ঐতিহাসিকভাবে, ট্রাম্প ও জাকারবার্গের মধ্যে এমন ঘনিষ্ঠতা কখনও দেখা যায়নি। ২০২১ সালে ক্যাপিটল হামলার পর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাকারবার্গ কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের মধ্যে এই টানাপোড়েন কমতে দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ, ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বাড়িতে জাকারবার্গের সাথে এক নৈশভোজে বসেছেন ট্রাম্প।
মেটার একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমন্ত্রণ পেয়ে মার্ক কৃতজ্ঞ এবং তার দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছেন। আমেরিকার উদ্ভাবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।”
গত আগস্টে প্রকাশিত একটি বইয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, জাকারবার্গ ২০২৪ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করলে তাকে “জীবনের বাকিটা সময় কারাগারে কাটাতে হবে।”
তবে অক্টোবরে এক পডকাস্টে ট্রাম্প বলেন, জাকারবার্গ নির্বাচনের বাইরে থাকার বিষয়ে যে অবস্থান নিয়েছেন তা “ভাল” এবং তার কাছ থেকে একটি ব্যক্তিগত ফোনকল পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
জাকারবার্গও ট্রাম্পের প্রতি নমনীয় হওয়ার কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন। ২০২১ সালে ক্যাপিটল হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মেটা তুলে নিয়েছে।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কিত কন্টেন্ট কম প্রচারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জাকারবার্গ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া, তিনি আর নির্বাচনী অবকাঠামোতে অনুদান দেবেন না বলে জানিয়েছেন। ২০২০ সালে তার ৪০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান নিয়ে অনেকেই মনে করেছিলেন এটি অনুদানের সীমা এড়িয়ে দেওয়ার একটি কৌশল।
ফ্লোরিডায় ডিনারে ট্রাম্প ও জাকারবার্গ কী আলোচনা করেছেন তা জানা যায়নি। তবে মেটা সাম্প্রতিক সময়ে বাড়তি নিয়ন্ত্রণের মুখোমুখি হয়েছে।
তবে ট্রাম্পের সঙ্গে জাকারবার্গের সম্পর্ক উন্নতির চেয়ে ইলন মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা বেশি আলোচিত হচ্ছে।
ইলন মাস্ক ট্রাম্পের প্রচারণায় ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন এবং তাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন। এই ঘনিষ্ঠতার কারণে মাস্ককে একটি নতুন সরকারি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের ওপর বিধিনিষেধ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
জাকারবার্গ এবং মাস্কের মধ্যে পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিদ্যমান। ২০১৬ সালে একটি স্পেসএক্স রকেট বিস্ফোরণে ফেসবুকের স্যাটেলাইট নষ্ট হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
যদিও দুই প্রযুক্তি উদ্যোক্তার মধ্যে সম্পর্কের এই পরিবর্তন সরাসরি লড়াইয়ের দিকে এগোয়নি, তবে ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভবিষ্যতের রাজনীতি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র: বিবিসি
নাহিদা