মাত্র ১৭ বছর বয়সে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এসথার গনজালেস
ক্যালিফোর্নিয়ায় ৪৫ বছর আগে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী এসথার গনজালেস। একটি ডিএনএ পরীক্ষার সূত্র ধরে, দীর্ঘ বছর পর এবার সেই মামলার সমাধান হয়েছে। পরিবারের জন্য এই সমাধান একদিকে যেমন স্বস্তি এনে দিয়েছে, অন্যদিকে তা গভীর বেদনার কারণ হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৭৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ার বেনিং শহরে বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন এসথার গনজালেস। নিজেদের বাড়ি থেকে প্রায় ১৩৭ কিলোমিটার দূরে বসবাস করতো তাঁর সেই বোন। বাড়ি থেকে রওনা হলেও শেষ পর্যন্ত বোনের বাড়িতে আর কখনোই পৌঁছাননি এসথার। একদিন পর তাঁর মৃতদেহটি ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কাউন্টির একটি মহাসড়কের কাছে তুষারে ঢাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল।
তদন্তে জানা যায়, এসথারকে ধর্ষণ করার পর তাঁকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তবে মামলাটির তদন্তে বছরের পর বছর কেটে গেলেও অপরাধীর পরিচয় নিয়ে কোনো সুরাহা মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত বীর্যের একটি নমুনা ১৯৭৯ সাল থেকেই সংরক্ষিত ছিল। এই নমুনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ডিএনএ ডেটাবেসেও কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
অবশেষে ২০২৩ সালে প্রযুক্তি ও ফরেনসিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে এই মামলাটির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। টেক্সাসের একটি ফরেনসিক জেনেটিক গবেষণাগারে সঙ্গে তত দিনে কাজ শুরু করেছিল মামলাটির তদন্ত দল।
নতুন করে ডিএনএ পরীক্ষায় সংরক্ষিত বীর্যের নমুনার সঙ্গে লুইস র্যান্ডলফ র্যান্ডি উইলিয়ামসন নামে এক ব্যক্তির রক্তের নমুনা মিলে যায়। তবে অভিযুক্ত উইলিয়ামসন ২০১৪ সালেই ফ্লোরিডায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি মার্কিন মেরিন কর্পস সদস্য ছিলেন।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ঘটনার দিন উইলিয়ামসন নিজেই কর্তৃপক্ষকে ফোন করে এসথারের মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি তখন দাবি করেছিলেন—দেহটি পুরুষ নাকি নারীর, তা চিহ্নিত করতে পারেননি। সে সময় তাঁর আচরণকে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে একটি পলিগ্রাফ পরীক্ষায় উতরে যাওয়ায় উইলিয়ামসনকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
ডিএনএ পরীক্ষায় এবার ঘাতক শনাক্ত হওয়ায় এসথারের পরিবার মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ায় তাঁরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে এই অপরাধ করেও কোনো শাস্তি না পেয়ে ঘাতকের মৃত্যু হওয়ায় তাঁরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
শহিদ