.
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে বাস্তুচ্যুত গাজা বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এর মধ্য এক বছরের বেশি সময় পার হলেও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি কোনো পক্ষ। আসন্ন শীতে গাজার শরণার্থী শিবিরে তীব্র মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। খবর আলজাজিরার।
গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সাহায্য, খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নেই। সেখানে শীতকালে ভারি বৃষ্টি এবং উচ্চ জোয়ারসহ ঠান্ডা তাপমাত্রা এবং রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে আরও কষ্ট বাড়বে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের। দক্ষিণ গাজার তাঁবুতে হতাশাজনক পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন আলজাজিরার সাংবাদিকরা।
সোমবার এক প্রতিবেদনে আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণ উপকূলে উচ্চ জোয়ার প্লাবিত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের কিছু তাঁবু ভেসে গেছে। সেখান থেকে সাংবাদিকরা বলছেন, শীত এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষরা বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে বসবাস করছে। ত্রাণ সহায়ক গোষ্ঠীর মতে, গাজার ১ মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি এই বছর শীতের আবহাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সম্বল নেই। অবরোধ এবং অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য এবং চিকিৎসা সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়েছে গাজায়। জনাকীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। পর্যাপ্ত গরম পোশাকের অভাব ক্যাম্পে বসবাসকারীদের, বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের বেঁচে থাকার জন্য হুমকিস্বরূপ। ইসরাইলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজাজুড়ে বাড়িঘর এবং অবকাঠামো সমতল করে ফেলা হয়েছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের কম্বল, কার্ডবোর্ড এবং এমনকি পুরনো চালের বস্তা থেকে তৈরি অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্থানীয় মানবিক গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে যে, জরুরি সাহায্য না পৌঁছালে আগামী মাসে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শীত মৌসুমে গাজার তাঁবু শিবিরে বাস্তুচ্যুত লোকদের দুর্ভোগ প্রশমিত করার জন্য আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।