ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিকল্প উপায়ে শিক্ষা নিচ্ছে আফগান মেয়েরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:০৬, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিকল্প উপায়ে শিক্ষা নিচ্ছে আফগান মেয়েরা

বিকল্প উপায়ে শিক্ষা

তালেবান তার চতুর্থ বছরে এসে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সালিহার মতো কিছু আফগান মেয়ে ও তরুণী শিক্ষার বিকল্প উৎস সন্ধান করছে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানে ১৪ লাখেরও বেশি মেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আফগানিস্তানে একজন চিকিৎসক হবার স্বপ্ন ছিল সালিহার (ছদ্মনাম)। কিন্তু সেই স্বপ্নের অন্বেষায় স্কুলে ফেরত যাবার সব সম্ভাবনা হারিয়ে যাওয়ায় সে এখন অনলাইনে ক্লাস করছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে যখন আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী সরে যায় এবং তালেবান ক্ষমতা দখল করে, তখন নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সালিহা। ১৮ বছর বয়সী সালিহা বলে, আমি স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু এখন সব ধরনের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে আমার আশা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে বা গোপন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যে কোনো ধরনের শিক্ষা গ্রহণ। নিরাপত্তার কারণে সালিহা তার পারিবারিক নাম জানাতে চায়নি। 
তালেবান শাসনামলে নারীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অর্জন, সরকারি বা বেসরকারি সংগঠনগুলোতে কাজ করা এবং পার্ক, জিম ও বিউটি স্যালুনে মেয়েদের যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অন্যান্য আফগান কন্যা ও তরুণীর মতো সালিহা এবং তার চার বোনকে বাড়িতেই থাকতে হবে, কিন্তু সে বলেছে সে তার শিক্ষাগ্রহণের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সালিহা জানায়, আমি একটি কম্পিউটার কেনার জন্য এবং ইন্টারনেটের খরচ মেটানোর জন্য একটি একটি করে পয়সা জমিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হলো, অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণের মতো সামর্থ্য সব আফগান মেয়েদের এবং নারীদের নেই।

এক জরিপে দেখা গেছে যে ২০২২ সালে আফগানিস্তানের মাত্র ৬ শতাংশ নারী ইন্টারনেটের নাগাল পেতেন, সেই তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ২৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারতেন। লার্ন আফগনিস্তান নামে সে দেশের একটি ডিজিটাল স্কুল নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা পাশতানা দুররানি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, আফগানদের কম্পিউটারে শিক্ষাগ্রহণের বিভিন্ন কারণ থাকায় তার সংগঠন বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার মডেল দিয়ে থাকে। দুররানি বলেন, এক পরিমাপের বিষয়টা আফগানিস্তানে খাটে না।

তাই এর মূল বিষয়টা হচ্ছে এটি নমনীয় এবং প্রতিটি সমাজের প্রতি যাতে সাড়া দিতে পারে, তেমন করেই বানানো হয়েছে। অনলাইনে ক্লাস ছাড়াও দুররানির সংগঠনটি ছয়টি প্রদেশে গোপনে স্কুল পরিচালনা করে, যেখানে প্রায় ৭০০ জন মেয়ে শিক্ষাগ্রহণ করে। তবে তিনি বলেন যাতে আরও মেয়েরা এসব ক্লাসে যোগ দিতে পারে সেজন্য স্থানীয় বয়স্ক লোকদের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।

×