সংগৃহীত ছবি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এ.সি.এম ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্রিটেনের ক্রুস ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার ভূখণ্ডে ব্যবহৃত হওয়ার পর, রাশিয়া দোনেশকে হামলা চালিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই হামলা ছিল মস্কোর কঠোর জবাব, যেখানে মাঝারি পাল্লার ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই পুতিন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) পুতিন এক বিবৃতিতে নতুন ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, "এই ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব নয়" এবং 'যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে' এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও পরীক্ষা চালানোর প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পর, ইউক্রেন প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটি ছিল পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের প্রথম ঘটনা।
কিয়েভের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার উপর হামলার পর, মস্কো তার ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এমন অস্ত্র ব্যবহারের সতর্কতা আগেই দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও এই নতুন পরিস্থিতি যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন করে দিয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ডিনিপ্রোর কেন্দ্রীয় পূর্বাঞ্চলীয় শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে একটি আগুন লেগে গেছে এবং দুইজন আহত হয়েছে। তবে ওই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি।
এদিকে, রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পর, যুদ্ধের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পুতিন বলেন, "ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের গতির চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে চলতে সক্ষম," এবং এটি এমন একটি অস্ত্র যা আটকানো যাবে না। তিনি এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে, পুতিন জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনের স্টর্ম শ্যাডো এবং আটাকামস ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া এই ওরেসেনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। প্রথমে এটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মনে করা হলেও, পরে মস্কো জানিয়েছে যে এটি নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম, যা নতুন করে বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।
পুতিনের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৫,৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যা রাশিয়ার শক্তিকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।
নুসরাত