সংগৃহীত ছবি
সৌদি যুবরাজ এবং ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে নতুন নৃশংসতার অভিযোগ উঠেছে, যেখানে তার ক্ষমতা ও সম্পদ ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যুবরাজ নিওম সিটির উন্নয়নে ব্যস্ত থাকলেও, যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীকে হত্যার অধিকার প্রদান করেছিলেন তিনি। এবার তার বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে।
২০ নভেম্বর, বুধবার, মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তার প্রতিবেদন প্রকাশ করে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহার, ক্ষমতার দुर্ব্যবহার এবং ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশের ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাদের কোম্পানি ও সম্পত্তি জব্দ করার কাজে জড়িত ছিলেন। এসব জব্দকৃত সম্পত্তি তিনি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) -এ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এক দশক আগে যেখানে পিআইএফ-এর সম্পদ ছিল ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, সেখানে এখন তা বেড়ে ৯২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই তহবিলের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ যুবরাজের হাতে থাকায়, তার সিদ্ধান্তেই নির্ধারণ হয় তহবিলের অর্থ কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হবে।
পিআইএফের অধীনে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটির নাম ‘নিওম’, যা মরুভূমির মধ্যে নির্মিত একটি অত্যাধুনিক সাই-ফাই শহর, যেখানে আধুনিক নাগরিক সুবিধা প্রদান করা হবে। তবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, নিওমসহ পিআইএফের অন্যান্য প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, শ্রমিকদের অধিক সময় কাজ করতে বাধ্য করা, দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন, এবং আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পিআইএফের প্রকল্পগুলোতে কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিকই অভিবাসী শ্রমিক বা সৌদি আরবের গ্রামীণ অঞ্চলের দরিদ্র ও কর্মজীবী জনগণ।
এছাড়া, ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষণা করেছিলেন যে, সৌদি আরব তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতগুলোকেও শক্তিশালী করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে, তিনি পর্যটন, শিক্ষা এবং অন্যান্য খাতগুলোকে তেলের চেয়ে বেশি শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ করতে চান। এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে সৌদি সরকার বিভিন্ন বড় মেগা প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে।
এই অভিযোগগুলির মাধ্যমে যুবরাজের বিরুদ্ধে নতুন দিকগুলি উন্মোচিত হচ্ছে, যা সৌদি আরবের ক্ষমতার ব্যবস্থাপনা এবং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
নুসরাত