গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী
গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় প্রতি ৩০ মিনিটে একটি শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। হাজার হাজার শিশুর কবরস্থানে রূপান্তরিত হয়েছে গাজা। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ১৭ হাজার ৪০০ শিশু নিহত হয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৯৭২ জনে পৌঁছেছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
অনেক শিশুই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। ফলে এখনো কয়েক হাজার শিশুর কোনো সন্ধান মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে এদের মধ্যে অধিকাংশই নিহত হয়েছে। এ ছাড়া যেসব শিশু বেঁচে আছে তাদের মধ্যে অনেকেই একাধিক যুদ্ধের আঘাত সহ্য করেছে এবং ইসরাইলি অবরোধের কারণে নিদারুণ সংকটে জীবন কাটাচ্ছে। জন্ম থেকেই তাদের অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকার লড়াই করে যেতে হচ্ছে। গাজায় নিহত শিশুদের মধ্যে ৭১০ শিশুর বয়সই এক বছরের কম। এ ছাড়া ১-৩ বছরের ১ হাজার ৭৯৩ শিশু নিহত হয়েছে। ৪-৫ বছর বয়সী ১ হাজার ২০৫ জন শিশু, ৬-১২ বছর বয়সী ৪ হাজার ২০৫ জন এবং ১৩-১৭ বছর বয়সী ৩ হাজার ৪৪২ জন শিশু নিহত হয়েছে।
এদিকে লেবাননে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় গত দুই মাসে ২০০ জনের বেশি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, লেবাননে প্রতিদিন গড়ে তিন শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে লেবাননে ২০০র বেশি শিশুর মৃত্যু হলেও এই সহিংসতা থামাতে সক্ষম ব্যক্তিরা কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এটি এক ভীতিকর নীরবতা।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ দিনে লেবাননে ছয়টি হামলায় বহু শিশু নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউনিসেফ কর্মকর্তা বলেন, গাজার মতো লেবাননের ক্ষেত্রেও ভয়াবহ মিল দেখা যাচ্ছে। লেবাননের শিশুদের জন্য এটি ভয়াবহতার একটি নীরব স্বাভাবিককরণে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজা উপত্যকাজুড়ে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। এরা ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে।