৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ, ১৮২.৩ কিলোগ্রাম ইউরেনিয়াম জমা করে ফেলেছে ইরান। পরমাণু বোমা তৈরির পথে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ইরান। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মাঝেই প্রকাশ্যে এল এমনই বিস্ফোরক তথ্য। পরমাণু শক্তিধর হয়ে উঠতে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে প্রস্তুতি চালাচ্ছিল ইরান।
এবার রাষ্ট্রসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা (IAEA)-এর প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হল নির্ধারিত সীমা ছাড়িয়ে ইউরেনিয়ামের মজুত ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে রাশিয়ার এই বন্ধু রাষ্ট্র। যা ইজরায়েল তো বটেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।
আইএইএ-এর রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ১৮২.৩ কিলোগ্রাম ইউরেনিয়াম জমা করে ফেলেছে। পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ করতে প্রয়োজন পড়ে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম। অর্থাৎ পারমাণবিক বোমা তৈরির কার্যত শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ইরান।
আগস্ট মাসে প্রকাশিত এই রিপোর্টের পর এই তালিকায় আরও ১৭.৬ কেজি ইউরেনিয়াম জমা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়েও ৩২ গুণ বেশি বেড়েছে ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত।
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে লাগাম টানতে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, রাশিয়া এবং জার্মানি। তবে একাধিক দেশের সংঘাতের জেরে শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি সাফল্যের মুখ দেখেনি। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় আমেরিকা। এর পর থেকে গোপনে অস্ত্রভাণ্ডার বাড়িয়ে চলেছে ইরান। যা বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র তৈরির শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ইরান যদি কোনওভাবে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয় সেক্ষেত্রে শুধু মধ্য-প্রাচ্য নয় বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। যার প্রভাব সরাসরি পড়বে ইজরায়েল ও রাশিয়াতে। কারণ এই দুই রাষ্ট্রই ইরানের সবচেয়ে বড় শত্রু। একইসঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একদিকে ইরান যখন পরমাণু বোমা তৈরির পথে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে, অন্যদিকে তখন পরমাণু যুদ্ধের সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছে ইউরোপে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতে থাকা সংঘাত পরমাণু যুদ্ধের পথে এগোতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
মফিজ