ফাইল ছবি
মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছল।পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর পুনরায় পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৩ নভেম্বর) করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে সমুদ্রপথে যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়।
তবে এটি ভারতের নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানের উপস্থিতি ভারতের জন্য নিরাপত্তার প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
এ বিষয়ে একজন ভারতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জানান, বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর- দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে পাকিস্তানের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। এতদিন এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম সিঙ্গাপুর বা কলম্বোতে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হতো।
বর্তমানে সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।এই পরিবর্তন শুধু বাণিজ্যের জন্য নয়, বরং এই রুট ব্যবহার করে চোরাচালানের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।এর ফলে অস্ত্র বা অবৈধ পণ্য বাংলাদেশ হয়ে ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে পৌঁছে যেতে পারে। এটি ২০০৪ সালের চট্টগ্রাম বন্দরের অস্ত্র আটকানোর ঘটনার মতো পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি করতে পারে।
তবে ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পাকিস্তানি জাহাজের নিয়মিত যাতায়াত হতে পারে মাদক বা অস্ত্র চোরাচালানের মাধ্যম। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারতের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হতে পারে। কারণ বাংলাদেশ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগ সহজ, যা নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
পাকিস্তানের বাংলাদেশস্থ হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ একে ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের এক বিশাল অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।তিনি বলেন, ‘এই নতুন রুট সরবরাহ চেইনকে আরও সহজ করবে। পণ্য পরিবহনে সময় কমাবে এবং উভয় দেশের জন্য নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করবে। ’
চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ব্যস্ততম বন্দর। এটি মিয়ানমারের কাছাকাছি অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে।তাই চট্টগ্রামে পাকিস্তানি জাহাজের নিয়মিত উপস্থিতি এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।১৯৭১ সালের পর নতুন এ সমুদ্র যোগাযোগের মাধ্যমে চট্টগ্রামে ৩০০টি কনটেইনার নিয়ে আসে জাহাজটি।
তাবিব