তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে আঙ্কারা সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এবং লেবাননে ইসরাইল যে গণহত্যা ও বর্বর আগ্রাসন চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে তুরস্ক এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। সৌদি আরব এবং আজারবাইজান সফর শেষে দেশে ফেরার পথে বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তুর্কি নেতা এ কথা বলেন। খবর মিডলইস্ট আইয়ের।
তিনি বলেন, তার নেতৃত্বাধীন তুর্কি প্রশাসন ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। তুরস্কের ক্ষমতাসীন জোট এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এই অবস্থান ভবিষ্যতেও ধরে রাখবে। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় আরও ৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ছয় ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে বলে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে। আইডিএফ জানায়, নিহত সেনারা সবাই গোলানি ব্রিগেডের ৫১ ব্যাটেলিয়নের সদস্য। নিহতদের মধ্যে একজন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পর্যায়ের কর্মকর্তা আর বাকি সবাই সার্জেন্ট অথবা ফার্স্ট সার্জেন্ট। এরদোয়ানের উদ্ধৃতি দিয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে ইসরাইলি কর্মকাণ্ডের শক্ত জবাব দিয়েছে তুরস্ক। পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রীকে গণহত্যার বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য এরদোয়ান তার ক্ষমতার ভেতরে থেকে সবকিছু করবেন বলেও জানান। ইসরাইলে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ যেসব অস্ত্রের চালান পাঠাচ্ছে সে ব্যাপারেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ইসরাইলে অস্ত্রের চালান পাঠানো অব্যাহত থাকবে ততক্ষণ ইসরাইল আরও বেশি আগ্রাসী হবে এবং ফিলিস্তিন ও লেবাননের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা-ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর থেকে তেলআবিবের সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হয়েছে। কিন্তু ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তুরস্কের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানামুখী সমালোচনা রয়েছে। ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্ক সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করেনি। গত মে মাসে গাজা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তুরস্ক ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এছাড়া ইসরাইলে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে পাঠানো হয় কিন্তু তেলআবিবে তুরস্কের দূতাবাস এখনো চালু রয়েছে। ইসরাইলি গণমাধ্যম হাআরেজ জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনারা দক্ষিণ লেবাননের একটি ভবনে প্রবেশ করার পর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
