সংগৃহীত ছবি
সমস্ত অভিযোগ আর বিতর্ক সঙ্গে নিয়েও দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনান্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন আমেরিকার গণমাধ্যমকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। কমলা হ্যারিসের পরাজয়ে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা, প্রভাব এবং দর্শক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর বছরের পর বছর ধরে নাও মিলতে পারে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর কিছু অনুগত জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁকে বিজয়ী করার মাধ্যমে জনগণ দেশটির সংবাদমাধ্যমকেও সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার সকালে ফলাফলের ডামাডোলের মধ্যেও কিছু সময়ের জন্য হলেও ফেডারেলিস্ট নামের সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘করপোরেট মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’ সম্পর্কে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪-এর নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গণমাধ্যম।
নির্বাচনে ট্রাম্প জিতে যাওয়ার পর তার ভক্ত ও ভোটারটা এখন দাবি করছেন, এই জয় সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও। এই নির্বাচনে ভেতর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোটি কোটি ভোটার প্রথাগত সংবাদমাধ্যমের বয়ানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ডেইলি ওয়্যারের পডকাস্টার ম্যাট ওয়ালশ লিখেছেন, “লিগ্যাসি মিডিয়া ‘অফিসিয়ালি মারা গেছে’। তাদের বয়ান তৈরি করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। ট্রাম্প ২০১৬ সালে মিডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আজ রাতে তিনি তাদের সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করেছেন। তারা (এসব গণমাধ্যম) আর কখনও প্রাসঙ্গিক হবে না।”
অনেকেই বলবেন, ওয়ালশের এই দাবি পুরোপুরি সত্য নয়; অতিরঞ্জিত। মঙ্গলবার বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে গণমাধ্যমগুলো নির্বাচনের সংবাদ প্রকাশ করেছে এবং এতে প্রমাণ হয়েছে তাদের প্রাসঙ্গিকতার কোনো ক্ষয় হয়নি। তবে ট্রাম্পভক্তদের অনেকেই ওয়ালশের সঙ্গে একমত—তারা বিশ্বাস করেন মূলধারার গণমাধ্যমের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারা যা পড়েন, তাতে ভরসা পান না। অনেক ট্রাম্পভক্ত এ ধরনের সংবাদমাধ্যমের পাঠক বা দর্শকও নন। তাদের কাছে সংবাদমাধ্যম হিসেবে টিকটক বা ফেসবুকের গ্রহণযোগ্যতা রয়টার্স, সিএনএনের চেয়ে বেশি।
ট্রাম্প কখনোই সংবাদ কভারেজ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি সবসময় একটি আরও অনুগত, প্রপাগান্ডামূলক গণমাধ্যম চান। এমনকি ফক্স নিউজ তাঁকে অপ্রতিরোধ্য সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়মিতই চ্যানেলটি সম্পর্কে অভিযোগ করেন। গত মাসেও তিনি ফক্সের মালিক রুপার্ট মারডকের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর নেটওয়ার্কটি ডেমোক্রেটিক দলের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
সুতরাং, ট্রাম্পের বিজয়ে প্রধান মিডিয়া আউটলেটগুলোর সঙ্গে তাঁর বৈরিতা নতুন করে শুরু হতে পারে। যেসব গণমাধ্যম নিজেদের নিরপেক্ষ দাবি করে, এমনকি যেগুলো পক্ষপাতদুষ্ট– উভয়ই চাপে পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাদের হুমকিকে কাজে পরিণত করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তিনি টিভি স্টেশনগুলোর লাইসেন্স প্রত্যাহার করতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি চলতি বছরই এক ডজনেরও বেশিবার এই হুমকি দিয়েছেন। তিনি যেসব সাংবাদিককে পছন্দ করেন না, হোয়াইট হাউসে তাদের প্রবেশাধিকার সীমিত করতে পারেন।
নুসরাত