পৃথিবীর স্থলভাগের থেকেও অনেক অনেক বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ জলভাগ। জলের ওপরে যেমন হাজার হাজার সুউচ্চ পর্বত রয়েছে, তেমনি জলের নিচে রয়েছে গভীর সমুদ্র খাত। এর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে এই মারিয়ানা ট্রেঞ্চ। মারিয়ানা ট্রেঞ্চ প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম প্রান্তে মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের ঠিক পূর্বে অবস্থিত।
স্পেনের রাজা চতুর্থ ফ্লিপের স্ত্রী মারিয়ানার নামানুসারে রাখা হয়েছিল মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের। মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের নামানুসারে এই সমুদ্রখাদটিকে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ নামকরণ করা হয়েছে। মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরতা প্রায় ১১,০৩৪ মিটার বা ৩৬,২০১ ফিট অর্থাৎ প্রায় ৭ মাইলের সমান। অর্থাৎ পুরো মাউন্ট এভারেস্টকেও যদি তুলে এনে এই জায়গায় ডুবিয়ে দেওয়া হয় তারপরও এভারেস্ট শীর্ষ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২১৩৩ মিটার বা ৭০০০ ফিট নিচে থাকবে।
এর গভীরতম অংশটির নাম চ্যালেঞ্জার ডিপ। যেটি গুয়াম দ্বীপের ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। চ্যালেঞ্জার ডিপ নামটি রাখা হয়েছে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ HMS Challenger এর নামানুসারে কেননা এই জাহাজের নাবিকরা এই অংশটি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন।
পৃথিবীর শীতলতম বিপজ্জনক স্থান এটি। সমুদ্রের গভীরতা যত বাড়তে থাকে পানির চাপ তত বাড়তে থাকে। ৩৬ হাজার ফুট গভীরে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে এর চাপের পরিমাণ প্রায় ৮ টন। পানির এই অতিমানবিক চাপ ইস্পাতকেও বেকিয়ে দিতে পারে অনায়াসে।
১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো পিকার্ড এবং ওয়ালস নামের দুই দুঃসাহসী অভিযাত্রী মারিয়ানার গভীরে যান। এতে তারা ব্যবহার করে ব্যাথিসক্যাপ নামের এক ডুবোযান। ৫ ঘণ্টা পানির নিচে যাত্রার পর গন্তব্যে পৌঁছান তারা। তাদের যাত্রাপথ মেঘে ঢাকার কারণে সেখানে ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে সমুদ্র তলদেশে মেঘ কোথা থেকে এলো। মূলত সমুদ্র গভীরে বালি, কাদামাটি ও অন্যান্য উপকরণ জমে মেঘের সৃষ্টি হয়।